April 29, 2024, 11:58 am


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2023-11-12 18:48:29 BdST

চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না: প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। তারা (বিএনপি) অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি। 

রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কি হাসপাতালে আক্রমণ করে? তারেক জিয়ার চামচারা এসব হামলা করছে বলেও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।

জনসভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি বাসে আগুন দিতে যায় তাকে ধরে সেই আগুনে ফেলে দেবেন। সে বুঝুক আগুনের কত জ্বালা।

সমাবেশের আগে প্রধানমন্ত্রী নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেন। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা। 

কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেওয়ায় ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমার কাছে ক্ষমতা নয়, দেশের স্বার্থই বড়। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে— এমন দৈন্যতায় শেখ মুজিবের কন্যা ভোগে না।’

২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ওই নির্বাচনে হারানোর জন্য শুধু বিদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানী-গুণীও উঠেপড়ে লেগেছিলেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছিল। ফলে আমরা ওই নির্বাচনে সরকারে আসতে পারিনি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রপতি আমাদের দেশে এসেছিলেন। আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে যখন লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন, তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমাদের পার্টি থেকে আমি এবং তখনকার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান আর বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন খালেদা জিয়া ও মান্নান ভুঁইয়া। সেখানে জিমি কার্টার আসেন দূত হিসেবে। এবারও একই প্রস্তাব। আমি একই কথা বলেছি। বলেছি, আমাকে সার্ভে করতে হবে, আমার দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে হবে, পঞ্চাশ বছরের রিজার্ভ থাকতে হবে, তারপর উদ্বৃত্ত গ্যাস বিক্রির কথা আমি চিন্তা করব।’

‘দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে— এমন দৈন্যতায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা ভোগে না। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না। একবার চিন্তা করেন, সেদিন যদি আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হতাম তাহলে কি আজ এত চমৎকার সার কারখানা আমরা করতে পারতাম?’

‘কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আমার চোখের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার রাষ্ট্রপতি এসে তার পিঠে হাত দিয়ে বাহবাও দিয়েছিলেন। তখন আমি জিল্লুর রহমান সাহেবকে বলেছিলাম, চাচা এখন চলেন। আমি বুঝতে পেরেছি কী হবে? কিন্তু আমি এটা কেয়ার করিনি। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থ বড়। আমরা সেখান থেকে চলে এসেছিলাম’- বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেন। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা। এটি সার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে সহায়তা করবে। সার আমদানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে

কারখানার কার্যক্রম শুরু হলে সার আমদানির ওপর নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। কারণ, দেশের মোট বার্ষিক ২৬ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয় কারখানাগুলো একসাথে ১৯.২৪ লাখ টন সার উৎপাদন করবে।

স্থানীয় কারখানাগুলো বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ টন উৎপাদন করছে এবং বাকি বার্ষিক চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) জানায়, কারখানাটিতে ৩০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ১১০ একর জমিতে ১৫,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির  দৈনিক সার উৎপাদন হবে ২৮০০ টন।

মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকার ৪,৫৮০.২১ কোটি টাকা দিয়েছে এবং ১০.৯২০ কোটি টাকা জাইকা, এইচএসবিসি এবং ব্যাংক অব টোকিও মিত্সুবিশি ইউএফজে লিমিটেড থেকে ব্যবসায়িক ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছে।

কারখানার দুটি বাষ্পীয় গ্যাস জেনারেটর ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এবং প্ল্যান্টটি চালানোর জন্য ২৮ মেগাওয়াট প্রয়োজন। এটি বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লু গ্যাস থেকে পরিবেশ দূষণকারী উপকরণ আহরণ করা হবে এবং ক্যাপচার করা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে (প্রায় ১০ শতাংশ)।

এটি দেশে ‘অত্যাধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী এবং সবুজ’ সার কারখানা যা ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে দেবে এবং কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা