April 25, 2024, 5:44 pm


Siyam Hoque

Published:
2020-04-02 20:14:02 BdST

ভালো আছেন খালেদা জিয়া, কোয়ারেন্টিন শেষ হলেই শুরু হবে চিকিৎসা


মুক্ত বাতাস এবং পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যে মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে শারীরিক সমস্যার উন্নতি হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসায় (ফিরোজা) হোম কোয়ারেন্টিনে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে পুরোদমে চিকিৎসা শুরু হবে।

করোনাভাইরাসের মহামারীতে সৃষ্ট পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছেন। দেশের এ সংকটকালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীসহ সমাজের বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। খালেদা জিয়ার পরিবার, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা সংকটের মধ্যে সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাস স্থগিত করা হয়েছে। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে গুলশানের ভাড়া বাসায় ওঠেন তিনি।

জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার যুগান্তরকে বলেন, পরিবারের সান্নিধ্য পেয়ে ম্যাডাম মানসিকভাবে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন। তবে ব্যথাসহ শারীরিক অন্যান্য সমস্যা আছে। আশানুরূপ উন্নতি না হলেও আগের চেয়ে তা কমতে শুরু করেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এরপর তার পুরোপুরি চিকিৎসা শুরু হবে। সুস্থতার জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন তিনি। সুস্থ হওয়ার পরই সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, গৃহকর্মী ফাতেমা ছাড়াও একজন নার্সকে তার দেখভালের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছেন। তাদের পরামর্শে নেতাকর্মীসহ কারও সঙ্গে এই মুহূর্তে দেখা-সাক্ষাৎ করছেন না। পরিবারের দু-একজন সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। সেটাও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে।

সাত্তার আরও বলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকলেও টিভি ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে তিনি দেশের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। দেশের এই মহাসংকটের সময়ে দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের সচেতন, সতর্ক থাকার পাশাপাশি অসহায়, গরিব, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জানা যায়, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকলেও সোশ্যাল এবং অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে নিকট-আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন খালেদা জিয়া। দেশের বাইরে থাকা ছেলে, ছেলের বউ ও নাতনিদের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলছেন।

ঢাকায় থাকা ভাইবোন, তাদের ছেলেমেয়ের সান্নিধ্যও পাচ্ছেন খালেদা জিয়া। ফলমূল ছাড়া বাইরের কোনো খাবার খাচ্ছেন না। যেটুকু খাবার তিনি খাচ্ছেন তা বাসাতে রান্না হচ্ছে। বোনের বাসা থেকেও আসে পছন্দের খাবার। খালেদা জিয়ার বাড়ির কাজকর্ম পুরোটাই করছেন গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম। যিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে ছিলেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, লন্ডনে অবস্থানরত পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় ডাক্তাররা তার দেখভাল করছেন। চিকিৎসার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হলে তারা জোবাইদা রহমানের পরামর্শ নিচ্ছেন।

এরই মধ্যে তার চিকিৎসায় ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। অধ্যাপক ডা. এফ এফ সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম, অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন ও ডা. মামুন রয়েছেন এ বোর্ডে। জোবাইদা রহমানের সঙ্গে কথা বলে তারা চেয়ারপারসনের চিকিৎসার একটি গাইডলাইন তৈরি করছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘ম্যাডাম এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন প্রধান কাজ হল তাকে একা থাকতে দেয়া। উনি আগের চেয়ে মানসিকভাবে ভালো আছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় তার পুরনো রোগগুলো জটিল আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে আগের ওষুধগুলোই চলছে। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নতুন করে ওষুধ দেয়া শুরু হবে।

 
 

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা