February 24, 2025, 6:39 am


সামিউর রহমান লিপু

Published:
2020-04-11 09:32:55 BdST

করোনার ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে একদল সাহসী তরুনের ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ আতংকের মাঝেও উচ্ছসিত মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার দরিদ্র বাসিন্দাগন


নিউজ ডেস্ক

গোটা বিশ্ব এখন মরনঘাতী করোনার ভয়াল থাবায় নাকাল। পর্যুদস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। এমনকি মহামারী করোনার এই বিষাক্ত ছোবলে দিশেহারা বিশ্বের তাবৎ ক্ষমতাধর রাস্ট্রসমূহ।

চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা হাজারো গবেষণা করেও আবিষ্কার করতে পারছেন না এই রোগের প্রতিষেধক।

সারা বিশ্বের মত এই মহামারী করোনা আঘাত হেনেছে বাংলাদেশেও। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এই জটিল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৭ জন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ৪২৪।

এদিকে করোনার কারনে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। করোনা মোকাবেলায় সরকার ইতিমধ্যে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি জনসাধারনকে ঘরে থাকা এবং সংগনিরোধ মেনে চলার আহবান জানিয়েছে।

যেহেতু করোনা ভাইরাস একটি সংক্রামক রোগ তাই করোনা রুগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সরকার এই ভাইরাসের সংক্রমন রোধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সীমিত বা পুরোপুরি লক ডাউন করতে বাধ্য হয়।

আর এই লকডাউনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্রগ্রামসহ মোট ২৮টি জেলা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই জেলাগুলোর বাসিন্দাগন। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানী ঢাকার বাসিন্দাগন।  

রাজধানী ঢাকার মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ শ্রমজীবী, দিনমজুর, রিক্সাচালক, সিএনজি চালক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ঘরে থাকার পরামর্শ মানতে গিয়ে এই নিম্ন আয়ের মানুষদের আয় অনেক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে চরম দারিদ্র্যের হার আগের তুলনায় বেড়ে গেছে ৬০ শতাংশ। ১৪ ভাগ মানুষের ঘরে কোনো খাবারই নেই।

এই পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরাও এগিয়ে আসছেন সমাজের হতদরিদ্র ও দুস্থ মানুষদের পাশে। কিন্তু এই সহায়তা বিচ্ছিন্নভাবে দেয়ার ফলে সমাজের সবাই এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না।

অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বেশিরভাগ হাউজিং সোসাইটি তাদের এলাকা লক ডাউন করে রাখছেন। তারা শুধু সংগনিরোধের উপর জোর দিচ্ছেন। কিন্তু যারা লকডাউনের শিকার হয়ে ঘরে বন্দী, তারা কিভাবে জীবন যাপন করছেন তা ভেবে দেখছেন না।     

তবে এই দিক থেকে ব্যাতিক্রম রাজধানীর মালিবাগ বাজার এলাকা। জাতির এই ঘোর দুঃসময়েও মালিবাগের কিছু সাহসী তরুনদের ব্যতিক্রমী সব কার্যক্রম আশার আলো দেখাচ্ছে সবাইকে।

এই সাহসী, উদীয়মান ও উদ্ভাবনী তরুনরা সরকার বা দলীয় কোন সাহায্যের আশায় না থেকে নিজেরা মিলেই আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এলাকার দুস্থ বাসিন্দাদের পাশে দাড়াতে।

নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও স্রেফ মানবিক কারনে প্রথম এই উদ্যোগটি নেন রাজধানী ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন মালিবাগ বাজার এলাকার বাড়ী ও ফ্ল্যাট মালিকদের নিয়ে গঠিত সংগঠন 'মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সোসাইটি'র সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম রূপম।

ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির সংগে সম্পৃক্ত থাকলেও কখনো পদ পদবীর পিছনে ছুটেননি এই ব্যাতিক্রমী মানুষটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, মমত্ববোধ ও একনিষ্ঠ ভক্ত এই মানুষটি দেশের সংকটময় মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে নেমে যান মাঠে।

নিজের বন্ধু বান্ধব, এলাকার বড়ভাই, বাড়িওয়ালা ও ব্যবসায়ীদের আহবান জানান এলাকার দরিদ্র কিছু মানুষদের পাশে দাড়াতে।

তার এই আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন সোসাইটির সভাপতি মোঃ আলম এবং সাধারন সম্পাদক  মোঃ মনির। তারা দুজন শুরু থেকেই সার্বক্ষনিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। শুরু থেকেই পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে এগিয়ে আসেন এই দুজন সাদা মনের মানুষ। 

তিনি জানান, এলাকায় তেমন বড় কোন ধনী ব্যক্তি না থাকলেও নিজেরাই সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়েই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন সব সময়।

প্রথমদিকে অন্য কারো সাড়া না পেলেও আশাহত হননি এই তরুন উদ্যোক্তা। বরং সোসাইটির কমিটিকে সাথে নিয়ে একটি সংজ্ঞবদ্ধ সচেতনতামূলক প্রচারনা কার্যক্রম শুরু করেন। 

করোনার প্রভাবে নিজেরা ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত কিছু বন্ধুবান্ধব, সোসাইটির সদস্যবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য মুরুব্বীদের সাথে নিয়ে প্রথমেই এলাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে জীবানুনাশক স্প্রে করার কাজ শুরু করেন।

এই কাজেরই অংশ হিসেবে এলাকার মসজিদ, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সকল বাসা বাড়িতে, প্রধান সড়ক সমূহ ও অলিগলিতে এবং রাস্তার পাশের ড্রেনগুলোতে প্রথমে জীবানুনাশক ও পরবর্তীতে ব্লিচিং পাউডার ছিটান।

আর এই কাজের সাথে জড়িত করেন এলাকার কিছু বেকার ছেলেকে। প্রতিদিন তাদের মাথাপিছু ৩০০ টাকা করে দিতেন। টানা বেশ কয়েকদিন এই কার্যক্রম তারা চালিয়ে যান নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করেই।

এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম দেখে পরবর্তীতে অনেকেই এগিয়ে আসেন সোসাইটির  এই মহতী উদ্যোগে শরীক হতে।  সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শুরু করেন নানা কার্যক্রম।   

এফটি টীমের সংগে একান্ত আলাপচারিতায় নাজমুল আলম রূপম জানান, "বিশ্ব যখন করোনার ভয়াল থাবায় কুপোকাত, তখনই আমাদের সোসাইটির সভাপতি আলম ভাই আর সাধারন সম্পাদক মনির ভাই উৎসাহ দেন কিছু করার জন্য। প্রথমদিকে কেউ উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে না আসলেও করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়া মাত্র আমরা মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সোসাইটির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই এলাকার প্রবেশপথগুলোতে চলাচল সীমিত করার উদ্যোগ নিই।"

"আমাদের সভাপতি সোসাইটির বাসিন্দাদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় আগেই এলাকার সব প্রবেশ পথগুলোতে লোহার গেট লাগিয়ে আমাদের কাজ সহজ করে দেন।"

"অন্যদিকে সোসাইটির সাধারন সম্পাদক দেশের বাইরে থাকায় নিয়মিত মোটা অংকের অর্থ সহায়তা করে যাচ্ছেন, দিচ্ছেন নানা পরামর্শ। 

"মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকাটি ডিআইটি রোড, অতীশ দীপংকর রোড ও দুটি বাজার সংলগ্ন হওয়ায় এখানে নানা শ্রেণী-পেশার লোক বসবাস করেন এবং প্রতিদিন আমাদের এলাকার মধ্য দিয়ে চলাচল করেন আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ। আমরা হাজারো চেষ্টা করেও এলাকায় মানুষের চলাচল সীমিত করতে না পেরে এক পর্যায়ে চীনের আদলেই আমাদের এলাকাটি লক ডাউন করার চেষ্টা করি।"

"প্রথমদিকে সীমিত আকারে করা হলেও কেউ তা মানতে চাইতেন না। পরবর্তীতে সরকারিভাবে সাধারন ছুটি ঘোষণা করা হলে এলাকার অনেকেই গ্রামে চলে যান। ফলে এলাকার সাধারন মানুষের আধিক্য কমে যায়।

অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে আমরা স্বউদ্যোগে পুরোপুরি লক ডাউন করে ফেলি আমাদের এলাকা।"

এর ফলে বহিরাগতদের চলাচল অনেকাংশে বন্ধ হলেও মালিবাগে বসবাসরত অনেকেই সরকার ঘোষিত দীর্ঘ ছুটিতে ঘরে না থেকে প্রায়শই এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে, চায়ের দোকান, খাবার হোটেলের সামনে আড্ডায় মগ্ন থাকতেন। মালিবাগে বেশ কয়েকটি মেছ থাকায় এখানকার বাসিন্দারাই বেশী বাইরে বের হতেন বলে এফটি টীমকে জানান নাজমুল আলম রুপম। 

এফটি টীম এলাকায় অবস্থানকালে রূপমের এই অভিযোগের প্রমান দেখতে পায়।

সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে পরবর্তীতে সোসাইটির পক্ষ থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের ঘরে থাকা ও সংগনিরোধে উৎসাহিত করতে থাকেন বলে জানান রূপম।

ধীরে ধীরে এলাকাবাসী সচেতন হতে থাকেন এবং সরকারি নির্দেশনাসমূহ মেনে চলতে শুরু করেন বলে এফটি টীমকে নিশ্চিত করেন তিনি।

এদিকে দীর্ঘ ছুটিতে কর্মক্ষম হয়ে পড়া এবং ব্যবসায় মন্দার ফলে এলাকায় অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। তাদের দু:খ দুর্দশার কথা ভেবে আবার নতুন করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ এবং তাদের সহযোদ্ধারা।

এই পর্যায়ে সরকারি সাহায্য বা দলীয় কোন সহায়তার আশায় না থেকে নিজেরাই খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করতে মাঠে নেমে পড়েন।

এলাকার বেশ কয়েকজন বাড়ীওয়ালা, দোকান মালিক, কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পরিচিত বড়ভাইরা এবং নিজেদের কিছু বন্ধুবান্ধব যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী চাল, ডাল, তেল, আলু, পিয়াজ, সাবান ও অর্থ দিয়ে এগিয়ে আসেন এলাকার অসহায় দুস্থ এই মানুষগুলোর পাশে দাড়াতে।

ছবিঃ মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম রূপম 

অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে যে কোন বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম এড়াতে প্রথমেই তারা নির্ধারণ করেন এলাকায় কাদের তারা এই সাহায্য করবেন। এরপর নাম ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে তাদের তালিকা তৈরী করে পৌঁছে দেন একটি করে কূপন।

পরবর্তীতে এই কূপন প্রদর্শন করে সোসাইটির কার্যালয় থেকে তারা নিজেরাই এসে নিয়ে যান খাদ্যসামগ্রী।

এই খাদ্য সহায়তার মধ্যে রয়েছে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি পেয়াজ, ১ কেজি লবন, ১ লিটার সয়াবিন তেল ও ২টি করে সাবান।

ইতিমধ্যেই এলাকায় বসবাসরত কয়েকজন কাঠমিস্ত্রী, ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী, সিএনজিচালক, ভ্যান ও রিক্সাচালক, দিনমজুর, কাজের বুয়াসহ বেশ কিছু দরিদ্র মানুষদের মাঝে দুইদফা বিতরন করা হয়েছে এই খাদ্য সহায়তা।

আর আসন্ন রমজানে এই খাদ্য সামগ্রীতে ১-২ কেজি ছোলা ও ২ কেজি চিনি এবং পবিত্র ঈদুল ফিতরে ছোলা বাদ দিয়ে সেমাই এবং নুডলস যোগ করার পাশাপাশি কিছু অর্থ দান করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

রূপম জানান তারা আপ্রান চেষ্টা করছেন এই সহায়তা প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার করে দেয়ার জন্য। অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। 

তবে রূপম পর্যাপ্ত তহবিল এবং খাদ্য সামগ্রীর যোগান নিশ্চিত করতে এলাকার বিত্তশালী, সামর্থ্যবান ও সর্বোপরি সরকার ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগনের সহযোগিতাও কামনা করেন।

কোন বাহবা বা প্রচার করতে নয় স্রেফ মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে তার এই উদ্যোগে যারা বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাদের সবার প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক এই তরুন সাহসী নেতা।

নাজমুল এফটি টীমকে জানান এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তিবর্গ; যাদের কথা না বললে আমি নিজেকে অপরাধী মনে করবো, এরকম কয়েকজন বড়ভাই আলম ভাই, মনির ভাই, সেলিম ভাই, মাসুদ ভাই, হানিফ ভাই, মন্টি ভাই, ইমন ভাই, চ্যানেল আইয়ে কর্মরত আরিফ ভাই এবং আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সালাম, হারূন সহ কয়েকজন ছোট ভাই এবং প্রতিবেশী বেশকয়েকজন বাড়িওয়ালাগন এবং এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী যারা শুধু এবারই নয় অতীতেও আমার বিভিন্ন উদ্যোগে এগিয়ে এসেছিলেন তাদের সবার প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।

সবশেষে নাজমুল আলম রূপম রাজধানীর প্রতিটি হাউজিং সোসাইটিগুলোকে এই পন্থা অনুসরণ করে নিজ নিজ এলাকার অসহায় মানুষদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান।

তার মতে প্রত্যেকটি এলাকায় এমন কিছু মানুষ আছেন যারা কিছু করতে চান। শুধু প্রয়োজন কারো উদ্যোগ নেয়া। পরবর্তীতে দেখা যাবে অনেকেই এগিয়ে আসবে। এভাবে আমরা যদি সবাই মিলে এগিয়ে আসি, তাহলে এই গরীব মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটবে, মিলবে খাদ্যের নিশ্চয়তা। আর তখন নিজে পাবেন এক আত্মতৃপ্তি যা কোটি টাকা দিয়েও মিলবে না।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.