February 25, 2025, 1:34 pm


মোঃ সোহেল রানা

Published:
2022-10-14 19:22:39 BdST

ঢাকার চারপাশের নদীর যথাযথ ব্যবহার বাড়ালে যানজট কমবে ৫০ ভাগ: সবুজ আন্দোলন


সারা পৃথিবীতে উন্নত রাষ্ট্রগুলো মানব সভ্যতার বিকাশের পাশাপাশি আধুনিক শহর গড়তে উন্নত পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করতে অন্যতম উপাদান বসবাসের উপযোগী শহর বাস্তবায়ন।

সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষণায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর বসবাসের অনুপযোগী। ঢাকা শহরে বর্তমান সময়ে প্রায় ২.৫০ কোটি জনগণের বসবাস। এক্ষেত্রে কিভাবে ঢাকা শহরকে বসবাসের উপযোগী করা যায় এ নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা।

তবে শহরের মধ্যে এবং চারপাশ দিয়ে যে সকল নদী ও খাল একসময় প্রবাহিত হতো সেগুলো দখল ও দূষণে জর্জরিত হওয়ার ফলে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপন্ন। ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করতে বর্তমান সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয়েরা অনেকাংশে ব্যর্থ।

বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন ঢাকা শহরকে বসবাসের উপযোগী করার জন্য জনসচেতনতা তৈরি ও গবেষণা বিষয়ক সেমিনারের মাধ্যমে সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সেই লক্ষ্যে ১৩ অক্টোবর পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে রাজধানীর মালিবাগে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে "ঢাকা শহরকে বসবাসের উপযোগী করতে সরকার ও তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা শীর্ষক" আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সবুজ আন্দোলন ছাত্র পরিষদের সভাপতি মোঃ সোহাগ খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। প্রধান আলোচক ছিলেন প্রত্যাশার বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক ডাক্তার হাবিবুর রহমান মিলন, সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ অর্থ সম্পাদক সালমা আক্তার শান্তা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ—সভাপতি জোসনা আক্তার মুন্নি, সেলিনা চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য সাব্বির হোসাইন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ঢাকা শহরের চারপাশের নদী বন্দরের যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে ৫০ ভাগ যানজট কমানো সম্ভব। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর সমন্বয়ে ঢাকা শহর বেষ্টিত। ইতোমধ্যে শহরের চারপাশ দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তবে সবুজায়ন বৃদ্ধি করার জন্য যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কথা ছিল তা সম্পূর্ণ উপেক্ষিত রয়েই গেছে। নদীর নাব্যতা সংকট দূর করার জন্য শহরের চারপাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোকে খনন করতে হবে এবং শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খাল গুলোকে নদীর সাথে সংযুক্ত করে পানি শোধনের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রধান আলোচক বলেন, ঢাকা শহরে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে সবুজায়ন সম্পূর্ণ উপেক্ষিত। ফুটপাতকে অবৈধভাবে দখল করার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সরাসরি ইন্ধন দেয় যার মাধ্যমে সব থেকে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ জনগণকে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো:

১) ফুটপাত দখল মুক্ত করতে প্রত্যেকটি দোকান এবং বাসার সামনে গাছের টবের ব্যবস্থা করতে হবে।

২) সরকারি জায়গা গুলো দখলমুক্ত করে স্থায়ীভাবে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করা এবং নদীর চারপাশ দিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করতে হবে।

৩) নদী খনন করে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে জলযান ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে যার মাধ্যমে যানজট নিরসন করা সম্ভব।

৪) নদীর সীমানা পিলার নির্ধারণ এবং শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খাল গুলোকে নদীর সাথে সংযুক্ত করতে হবে পাশাপাশি খাল মুখে ইটিভি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৫) বাসার সকল ছাদে ছাদবাগান তৈরি করা এবং সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।

৬) প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমানো,পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো, ময়লা ফেলানোর জন্য জায়গা অধিকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭) ঢাকা শহরের চারপাশের জেলাগুলোকে পরিকল্পিত নগরায়ন সুবিধার মধ্যে আনা এবং সরকারিভাবে গৃহীত সকল আবাসন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন এবং ২৫ ভাগ সবুজায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলন ছাত্র পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইমন ইসলাম, ওয়াজিব উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক নাবিল আহসান জয়, সহ—দপ্তর সম্পাদক সফিকুল আলম সায়েম, আলি শরিফ প্রমুখ।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.