শাহীন আবদুল বারী
Published:2025-11-03 12:58:30 BdST
টাঙ্গাইল-৫ আসনে টুকুই বিএনপির যোগ্য প্রার্থী
আওয়ামী দুঃশাসনে নিষ্পেষিত, নির্যাতিত ও জেল-জুলুমের শিকার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ৩৫০টি মিথ্যা মামলা ও ১২ বার জেল খেটেছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের যাতাকলে টুকুর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ৫টি বছর। টুকুর সহধর্মিনী সায়মা পারভীন সিম্মি প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সন্তান ও স্বজনদের নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। পরিবারের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও সাড়া দেয়নি হাসিনার প্রশাসন যন্ত্র। টুকুকে জেলের বাইরে ও ভেতরে কয়েকবার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
টুকুর বড় ভাই সাবেক এমপি এডভোকেট আবদুস সালাম পিন্টু বিনা দোষে কারাগারে ছিলেন প্রায় ১৭ বছর। পরিবারের অন্য সব ভাইদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল জঙ্গির সাথে সম্পৃক্ত সাজানো মামলা। এই পরিবারটিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে নানা বানোয়াট, মিথ্যাচার ও নির্যাতন করেছে পতিত সরকার। টুকু পরিবারের উপর স্পর্শকাতর যেসব নির্যাতন চালানো হয়েছে তা শুনলে গাঁ শিউরে ওঠে। তারপরও সালাম পিন্টু-টুকু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধরে রেখেছেন। পরিবারের মায়া ত্যাগ করে জীবনের প্রায় সবটুকু সময় ব্যয় করে যাচ্ছেন দলের জন্য।
হাসিনা সরকারের অন্যায়, অবিচার প্রতিহত করতে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে অসংখ্যবার রাজপথে রক্তাক্ত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। রাজপথে আন্দোলনের সময় গাড়ির গ্লাস ভেঙে রক্তাক্ত অবস্থায় টেনে হিচড়ে বের করে টুকুকে মিন্টু রোড়ে নিয়ে চোখ বেধে নির্মমভাবে পিটিয়েছে হাসিনার পুলিশ বাহিনী। মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি শিরোনাম হয়েছেন বিএনপির এই কারা-নির্যাতিত নেতা।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া টুকুর সাহস, শক্তি, মেধা, ধৈর্য ও সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করতেন প্রায় সময়। টুকুকে মূল্যায়ন করে ২০২৪ সালে বিএনপির প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। টুকুর রাজনৈতিক এবং নৈতিক আচরণের কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন। বিএনপির কঠিন সময়ে মাঠের নেতাদের মধ্যে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু অন্যতম।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। টুকুর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ হাইকমান্ড টাঙ্গাইল-৫ আসনে টুকুর জনপ্রিয়তার বিষয়ে অবগত হয়েছেন। টাঙ্গাইলে ভঙ্গুর রাজনীতিতে টুকুর সার্বিক চেষ্টায় সর্বস্তরের জনগণ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে এক সুন্দরময় অবস্থার আভাস পাওয়া গেছে।
তবে, কতিপয় স্থানীয় শীর্ষনেতা টুকুর রাজনৈতিক গঠনমূলক কর্মকান্ড দেখে হতাশায় ভুগছেন। এসকল নেতারা ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে দলের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত রয়েছেন। তাদের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দলের হাইকমান্ড ইতোমধ্যে জানতে পেরেছে। বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু মেধা, কৌশল ও ধৈর্যের সাথে সবকিছু মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। দল ও নেতাকর্মীদের স্বার্থে একের পর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করছেন। অপরদিকে, যারা মিথ্যা প্রচারনা আর অপবাদের আশ্রয় নিয়েছেন তাদের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। দলের নেতাকর্মীসহ জনবিচ্ছিন্নতায় ক্রমেই ছিটকে পড়ছেন তারা।
স্থানীয়দের মতে, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভোটারদের কাছে এতো জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, তিনি এমপি না হয়েই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে সদর উপজেলার বিশাল চরাঞ্চলের উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে টুকুর আন্তরিক চেষ্টা ও তদবিরের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শুরু হবার পথে। তাঁর বিনয়ী আচরণ টাঙ্গাইল সদরের মানুষের কাছে প্রশংসার পাশাপাশি গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে।
টাঙ্গাইলে গত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী দুঃশাসন ও নির্যাতনঃ সারাদেশে দলমত নির্বিশেষে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নির্যাতনের যে তান্ডব চলেছে, টাঙ্গাইলেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিএনপি-জামায়াতসহ ভিন্নমতের মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, হত্যা, গুম এবং তাদের জমিজমা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ছিল অনেকটা নিত্যদিনের ঘটনা। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন আর অত্যাচারের ভয়াবহ চিত্র বলে শেষ করা যাবেনা। জেলা শহর থেকে তৃনমুল পর্যায়ে একই কায়দায় চলেছে নির্যাতন।
সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২৮১টি মামলায় অন্তত নয় হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়। টাঙ্গাইল থেকে বিএনপি নিধন করতে নেয়া হয় বিশেষ পরিকল্পনা। এর অংশ হিসেবে হাফডজন নেতাকর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। কতজন নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরন করেছেন তার হিসাব নেই। বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করা হয়। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে অনেকে দেশত্যাগ করেন। টাঙ্গাইলে গণহারে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পান আওয়ামী নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীরা। ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পুলিশের গুলিতে জুলাই অভ্যুথানে টাঙ্গাইলের নয়জন ছাত্রজনতা নিহত হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টাঙ্গাইলে আহত হয়েছে দুইশ’ ৭০ জন। যাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সবকিছুকে সামাল দিয়ে বিএনপিকে একটি শক্তিশালী জায়গায় দাড় করিয়েছেন।
বর্তমানে, বিএনপির যে সব শীর্ষ নেতা আওয়ামী দোসরদের শেল্টার দিচ্ছে তাদের মুখোমুখি শত্রুতে পরিনত হয়েছেন টুকু। টাঙ্গাইলে বিএনপির রাজনীতিতে টুকুর বিকল্প নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
সালাম পিন্টু-টুকু পরিবারের উপর জুলুম-নির্যাতন
টাঙ্গাইলের একজন সৎ, সজ্জন ও সাদাসিধে নেতা টুকুর বড় ভাই, জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। তাকে ফাঁসানো হয় ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়। টাঙ্গাইল থেকে বিএনপি নিধন পরিকল্পনার অংশ ছিলো হাসিনা সরকারের। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যা মামলায় আব্দুস সালাম পিন্টুর দুই ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও রাতুল বাবুকেও আসামী করা হয়। হাসিনার আদালতে সালাম পিন্টু ও মাওলানা তাজউদ্দিনের ফাঁসির আদেশ আর রাতুল বাবুর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়। আব্দুস সালাম পিন্টু এই মামলায় ১৭ বছর কারাবরণ করেন। ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পতন হলে ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আব্দুস সালাম পিন্টু কারামুক্ত হন। তার দুই ভাই ছিলেন গত ১৭ বছর পলাতক।
সালাম পিন্টুর আরেক ভাই ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কৃষিবিদ শামছুল আলম তোফা একাধিক মামলার আসামী হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন।
আব্দুস সালাম পিন্টুর আরেক ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে ৩৫০ মামলায় আসামী হন টুকু। তিনি ১২ বার গ্রেফতার হয়ে ৫ বছর কারাভোগ করেন। রিমান্ডের নামে টুকুর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন।
আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, আমি টাঙ্গাইলের মানুষের সাথে কথা বলতে পারবো, সভা-সমাবেশ করতে পারবো এটা কারাগারে বসে জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি। তিনি বলেন, আমাকে ২৪ বার রিমান্ডে নেয়া হয়। নির্যাতনে পায়খানা, প্রস্রাব আর মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকতো। কিন্তু নির্যাতন থেকে কোন নিস্তার ছিলো না।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমাদের পরিবারকে টার্গেট করেছিল। বিএনপিকে ধ্বংস করাই ছিলো তাদের মূল লক্ষ্য। তবে আমরা তাতে দমিনি। নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে জাতীয়তাবাদি ঝান্ডা বহন করেছি। এখন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কাজ করছি। যদি সর্বস্তরের জনগণ সুযোগ দেয় আর আল্লাহর রহমত থাকে টাঙ্গাইলকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করবো।
টুকুর জনপ্রিয়তা ও সদরে উন্নয়নের ছোঁয়া
টাঙ্গাইল - ৫ (সদর) আসনে প্রার্থী হয়েছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। নিজেকে সাধারন মানুষের কাছে তুলে ধরতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ফলে ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে টুকু একটি জনপ্রিয় নাম। সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও তদবিরে বিশেষ করে বিশাল চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।
মাহমুদ নগর ইউনিয়নের বহুলী ও মাকোরকোল এর মধ্য দিয়ে ধলেশ্বরী নদীটি প্রবাহিত। বর্ষাকালে নদীটি পানিতে পরিপূর্ন থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে ১/২ ফিট পানি থাকে। প্রায় অধিকাংশ অংশে বালি জমে থাকে। অধিকাংশ মানুষ প্রতিদিন ইঞ্জিন চালিত খেয়া নৌকায় নদী পাড় হয়ে টাঙ্গাইল সদরে আসা যাওয়া করে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে ঘোড়ার গাড়ি, অটোরিকসা ও পায়ে হেঁটে ওই এলাকার আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ নদী পারাপার হয়। মেজর জেনারেল হাসান মাহমুদ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে টাঙ্গাইল সদর হতে ধলেশ্বরী নদীর পর্ব পাড় পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মান করেছিলেন। কিন্তু ব্রীজটি নির্মান করতে পাড়েননি। তাই টাঙ্গাইল পশ্চিম পাড় সহ চৌহালী উপজেলার মানুষের প্রানের দাবি ধলেশ্বরী নদীতে একটি আরসিসি ব্রীজ নির্মান হোক। প্রায় ৭০০ মিটার এই ব্রীজের একটি ছাড়পত্র ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ থেকে এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অক্লান্ত চেষ্টা।
চরাঞ্চলের মানুষ জানান, মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের পর বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর তারা ভরসা রাখছে। তিনি ইতোমধ্যে চর অঞ্চলের মানুষের পাশে বিভিন্নভাবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সুপারিশে ৮টি রাস্তার কাজ পাশ হয়েছে, যা নির্বাচনের আগেই সম্পন্ন হবে বলে আমরা চর এলাকার মানুষ জানতে পেরেছি। এছাড়াও মসজিদ ও মাদ্রাসা সহ বহু সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। আমরা চর এলাকার মানুষ সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই। তিনি এমপি হলে মন্ত্রীও হবেন বলে টাঙ্গাইলবাসী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
টুকুর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার
টুকুর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। একের পর এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও কুৎসা রটানো শুরু করেছে। এই ব্যপারে টুকু টাঙ্গাইল মডেল থানায় একাধিক সাধারন ডায়েরি করেছেন।
সম্প্রতি, অজ্ঞাত এক নারীকে একটি হত্যা মামলার বাদী সাজিয়ে শেখানো বক্তব্য রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। নেতাকর্মীদের দাবি, সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে ইতিপুর্বেও স্বার্থান্বেষী মহল একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও কুৎসা রটনা চালায়। তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ সদর আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে কাজ করছেন। এই ব্যপারে টুকু টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেছেন।
জানা গেছে, সাম্প্রতি রাত তিনটার দিকে শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় নিজের বাসায় অবস্থান করছিলেন। এসময়ে তার হোয়াইটস এ্যাপে একটি অডিও বার্তা আসে। এতে দেখা যায়, দৈনিক বাংলা সময়ের সাংবাদিক পরিচয়ধারী জসিম হত্যার কথিত বাদীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে টুকুর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য আদায় করে একটি অডিও রেকর্ড করা হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়। ভবিষ্যতে তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে এই ব্যপারে নিয়মিত মামলা করা হবে বলে সাধারন ডায়েরিতে উল্লেখ করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এই ঘটনায় দৈনিক আমার দেশ ও এনটিভির টাঙ্গাইল প্রতিনিধি সাংবাদিক মহব্বত হোসেনকেও জড়ানো হয়। ষড়যন্ত্রমূলক এই ঘটনায় তিনিও থানায় সাধারন ডায়েরি করেন।
এদিকে সম্মেলনের পর তিন বছর কেটে গেছে জেলা বিএনপির কমিটির মেয়াদ। এখনো পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। জেলা কার্যালয় নেই ১৮ বছর ধরে। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক চালাচ্ছেন বিএনপি। ফলে দুই নেতায় চলছে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কার্যক্রম। জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম হতাশা আর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।
তৃনমুল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত ১৮ বছর ধরেই জেলা বিএনপি চলছে কার্যালয়বিহীন। ৫ আগষ্টের পরে নেতাকর্মীরা আশা করেছিল জেলার সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক জেলা বিএনপির জন্য একটি কার্যালয় পুনঃপ্রতিষ্টার করবেন। কিন্তু তা আর বাস্তবে হয়নি।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের পহেলা নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে হাসানুজ্জামিল শাহীন সভাপতি এবং এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। একতরফাভাবে বানানো কাউন্সিলরদের দিয়ে কেন্দ্রীয় এক নেতা তার পছন্দমত দুই নেতাকে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বানান। ফলে বিএনপি এখানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে।
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, যারা তিন বছরেও বিএনপির জেলা কমিটি দিতে পারেনি তারাই এমপি পদে মনোনয়ন পেতে মরিয়া। বিষয়টি লজ্জাজনক ও হাস্যকর বলে অভিযোগ করেছেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার
> ১৯৯০ সালে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের সভাপতি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
> ১৯৯৩ সালে সদস্য, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা (এ্যানি-সুজন)
> ১৯৯৩ সালে আহ্বায়ক হল সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি।
> ১৯৯৪ সালে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা (মোশাররফ-মনির কমিটি)
> ১৯৯৭ সালে যুগ্ম আহ্বায়ক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
> ১৯৯৭ সালে সদস্য, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ (এ্যানি-সোহেল কমিটি‘র)।
> ১৯৯৮ সালে প্রথম সহ সাধারণ সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ (সোহেল-পিন্টু কমিটি)
> ২০০০ সালে সহ সভাপতি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ (পিন্টু-লালটু কমিটি'র)।
> ২০০১ সালে টিম লিডার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ‘র বরিশাল বিভাগীয় সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি
> ২০০২ সালে প্রথম সদস্য, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি (লালটু-মোশারফ আহ্বায়ক কমিটি)
> ২০০৩ সালে সিনিয়র সহ-সভাপতি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল; কেন্দ্রীয় সংসদ (লালটু-হেলাল কমিটি)
> ২০০৪ সালে আহ্বায়ক, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
> ২০০৫ সালে সিনিয়র সহ-সভাপতি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল; কেন্দ্রীয় সংসদ (হেলাল-বাবু কমিটি)
> ২০০৯ সালে সভাপতি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল; কেন্দ্রীয় সংসদ
> ২০১০ সালে সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি‘র)কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি।
> ২০১৭ সালে সাধারণ সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী যুবদল; কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি
২০২২ সালে সভাপতি, জাতীয়তাবাদী যুবদল; কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি
> ২০২৪ সালে বিএনপি'র প্রচার সম্পাদক
উল্লেখ্য, কর্মীবান্ধব এবং দলের পরীক্ষিত মাঠের নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে মনোনয়ন পেলে সাড়ে ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা আসনটি বিএনপি ফিরে পাবে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.
