নেহাল আহমেদ
Published:2024-08-25 17:01:35 BdST
বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যই বাংলাদেশের সৌন্দর্য
আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির শক্তিই আজকে যে কোনো সংকটে বারবার শক্তি জোগাচ্ছে আমাদের।আমরা সবাই এক নই। এক জায়গার নই, এক রকমের নই। অনেক পার্থক্য। বৈষম্য সমাজে নানান চিন্তার নানান মানুষ। পার্থক্য খুঁজতে গেলে এত অধিক সংখ্যায় পাওয়া যাবে যে মনে হবে ঐক্যের কোনো সুযোগই নেই।
অথচ আমাদের গভীর একটা ঐক্য রয়েছে একটি জরুরি জায়গায়, সেটি বাঙালি পরিচয়। যখনই বাঙালি কোনো বিজাতীয় শক্তির দ্বারা অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন হয়েছে, তখনই তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই ঐক্যের প্রয়োজনে সবাইকে আহ্বান জানাতেও হয়নি বা কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়নি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা।
এই ঐক্যের শক্তি ছিল হাজার বছরের সংস্কৃতি লালন রবীন্দ্রনাথ-নজরুল বিভিন্ন শিল্পী সংস্কৃতির কবিতায়, গানে, সাহিত্যে। এই ঐক্যের শক্তি ছিল রজনীকান্ত-শাহ আবদুল করিমের গানে। এই ঐক্যের শক্তি ছিল লালন-রাধারমনের গানে। এই ঐক্যের শক্তি ছিল জীবনানন্দের-জসীমউদদীনের কবিতায়। এই ঐক্য ছিলো দেশের প্রতি ভালবাসার।
বাঙালির এই যে চেতনা সংস্কৃতির বন্ধন, এই বন্ধন কোনো বৈষয়িক লাভের জন্য নয়, এটি হৃদয়ের অতল গভীর থেকে উৎসারিত মানুষের নিরন্তর প্রেরণার উৎস হিসেবে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় কল্যাণে সবসময় প্রেরণা জুগিয়ে আসছে।
বাঙ্গালী বিভিন্ন আন্দোলনে, সংগ্রামে এবং জাতীয় কর্তব্যের ক্ষেত্রে দেশের প্রশ্নে আপসহীন। আজকেও যখন আমরা এই আধুনিক সমাজে নানা সংকট দেখতে পাই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সংকটসহ সামাজিক অবক্ষয়ের অনেক বিষয়; আজকে আধুনিক সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আমরা দেখতে পাই নিয়ত যেমন, পারিবারিক সংকট, আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতা বা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখতে পাচ্ছি বা সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে যে বাধা ও সংকট দেখতে পাচ্ছি, তা উত্তরণের মূল শক্তি জোগাবে আমাদের সংস্কৃতি।
আজকে যখন পুরো বিশ্ব আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সভ্যতার চাকায় গতিশীল থেকে জীবনকে দেখতে অভ্যস্ত, সেই সময় বাঙালি সুকুমার, রুচিশীল, মানবিক, ভ্রাতৃত্ববোধ, কল্যাণ, সত্য ও ন্যায়ের পথে ঐক্যবদ্ধ থাকবে বিশ্বাস করি। আমাদের জাতীয় সংকট মোকাবিলায় এবং সম্ভাবনাময় সমৃদ্ধ বাঙালি জাতীয় অগ্রগতি ও সাফল্যের ক্ষেত্রে এই ঐক্যকে এই শক্তিকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এই আমাদের সযত্নে লালন করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে লড়ছে দেশ। পানিতে নিমজ্জিত দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর সহ অনেক জেলা। এরই মধ্যে ডুবে গেছে বহু বাড়িঘর ও স্থাপনা। বাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় ছাদে আশ্রয় নিচ্ছেন বহু দুর্গত মানুষ।
এই আকস্মিক বন্যায় দেশের ১১টি জেলা আক্রান্ত হয়েছে উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৯। এসব জেলায় বন্যাকবলিত হয়ে মারা গেছেন ১৫ জন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক তথ্যবিবরণীতে এই তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আকস্মিক বন্যায় দেশের ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব জেলার ৭৭টি উপজেলা এবং ৫৮৯টি ইউনিয়ন বা পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। এই ১১ জেলায় মোট ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৯ পরিবার পানিবন্দি। যাতে মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৯ জন।
তরুনদেন এই ঐক্য কোটি মানুষের সহযোগিতা, সহমর্মিতা আবেগ বার বার আমাদের প্রেরণা জোগাবে।
একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক হবে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.