অনলাইন ডেস্ক:
Published:2024-10-24 12:26:33 BdST
ডিএনসিসি নীরব কেন,লাইসেন্স ছাড়া চলছে ১৩০০ দোকান
প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা নিউ সোসাইটি মার্কেট এখন বেশ জনপ্রিয়। মার্কেটটিতে প্রায় ১৩০০ দোকান রয়েছে। তবে এই মার্কেটের কোনও দোকানেরই ট্রেড লাইসেন্স নেই। মার্কেট কমিটির দাবি, মার্কেটটিতে প্রায় ২৫ বছর ধরে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রয়েছে। কেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না, জানা নেই বলে জানান মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। ফলে বছরে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে ডিএনসিসি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে গড়ে ওঠা এই মার্কেট ধীরে ধীরে আকারে বড় হয়। একসময় মিরপুর ১১ অ্যাভিনিউ ৪-এর একাংশের পুরো আবাসিক এলাকা ঘিরে এই মার্কেট স্থায়িত্ব পায়। পরবর্তী সময়ে মার্কেটটি সরিয়ে নিয়ে পাশে আরেকটি মার্কেট তৈরিতে উদ্যোগী হয় ঢাকার অবিভক্ত সিটি করপোরেশন। ওই মার্কেটে দোকান বরাদ্দের জন্য দুই কিস্তিতে ১৪ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানান নিউ সোসাইটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। পরে ১৯৯৬ সালে মার্কেটটির পাশেই গণপূর্ত বিভাগের দেওয়া ৬ বিঘা জমির ওপর ছয়তলা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২৮ বছরেও সেই কাজ শেষ হয়নি নানা জটিলতায়। প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও এটি পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে আছে। ফলে ব্যবসায়ীদের নতুন মার্কেটেও যাওয়া হচ্ছে না।
মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলেন, ট্রেড লাইসেন্স না থাকায় অনেক সময় ব্যাংক ঋণও নেওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া মার্কেটটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ, ক্রেতার সংখ্যা বাড়ায় লেনদেনেও নানা সমস্যা হয়। দ্রুতই এই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা উচিত, অন্যথায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় এড়াতে পারবে না ডিএনসিসি। কারণ টাকা নেওয়ার পরও দোকান বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
ব্যবসায়ীদের দাবি, নতুন করে ট্রেড লাইসেন্স না দেওয়ার কারণ ডিএনসিসির যে মার্কেট তৈরি হওয়ার কথা ছিল সেখানে মার্কেটের বাহিরেও অনেকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে। ফলে ট্রেড লাইসেন্স দিলে ওইসব দোকানি বাদ পড়বেন। কারণ ট্রেড লাইসেন্স দেখেই দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। আর এ জন্য সিটি করপোরেশন দায়ী থাকবে। তারা সে সময় মার্কেট পরিচালনাকারী নেতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অতিরিক্ত দোকান বরাদ্দ দিয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ১৯৮৪ সালে প্রস্তাবিত ডিএনসিসি মার্কেটে দোকান বরাদ্দের জন্য টাকা নেওয়া শুরু হলে তৎকালীন সিটি করপোরেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে আঁতাত করে ওই সময়ের নিউ সোসাইটি মার্কেট কমিটি ও মার্কেট ব্যবসায়ীদের সমবায় সমিতি দোকানির সংখ্যার চেয়ে অধিক লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দোকান বরাদ্দ দিয়েছিল। ২০০৪ সালে দ্বিতীয় দফায় দোকান বরাদ্দ বাবদ আবারও টাকা নিলে সে সময়ও একই কাজ করে তারা। ফলে এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে মার্কেট কমিটি ও ব্যবসায়ী সমিতির মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। নতুন মার্কেটে যাওয়ার জন্য একপর্যায়ে কেউ আর আগ্রহ দেখান না। এদিকে ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ রেখে এই মার্কেট উচ্ছেদের চেষ্টা করে সিটি করপোরেশন। এ নিয়ে হাইকোর্টে ব্যবসায়ীদের পক্ষে একটি রিট আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৩-এর আগে মার্কেটে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হতো। তখন ট্রেড লাইসেন্স দিতো মার্কেটের দোকান নম্বর দেখে। পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে নিজের সুবিধার্থে কিছু কিছু দোকানি ভুয়া হোল্ডিং নম্বর দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কারণ মার্কেটের অধিকাংশ দোকানের কোনও স্থায়ী ঠিকানা নেই।
মার্কেটের ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.