February 19, 2025, 11:02 am


এফ টি রিপোর্ট

Published:
2025-02-13 10:27:36 BdST

আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে শবেবরাত


শবেবরাত পবিত্র একটি রাত। এ রাতে মহান আল্লাহতায়ালা বান্দাদের রিজিকে বরকত, মুসিবত দূর, মনের আশা কবুল ও ক্ষমা প্রদান করেন। ইবনে মাজাহ শরিফে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন তোমাদের সামনে শাবান মাসের ১৫ রাত আগমন করে তখন তোমরা অনেক ইবাদত করো, রোজা রাখো, কারণ এ রাতে আল্লাহতায়ালা বিশেষ নজর দেন এবং বলতে থাকেন কেউ কি আছো যে ক্ষমা চাচ্ছো- তাকে আমি ক্ষমা করে দেব, যে রিজিক চাও তার রিজিকে বরকত দান করব, কেউ মুসিবতে থাকলে তার মুসিবত দূর করে দেব।’ পবিত্র শাবান মাসের ১৫ তারিখ রাতকে শবেবরাত বলে। ইমাম কুরতুবি (রা.) বলেন, ‘এ রাতের চারটি নাম রয়েছে- ১. লাইলাতুল মুবারাকা ২. লাইলাতুল বারাআত, ৩. লাইলাতুল ছাক, ৪. লাইলাতুল নিসফি মিন শাবান।’ তাফসিরে কুরতুবি।
শবেবরাতকে ঈদুল মালায়িকাহ নামও দেওয়া হয়েছে। আসমান থেকে ৭০ লাখ ফেরেশতা পবিত্র শবেবরাতের রাতে জমিনে আগমন করেন। বিশেষভাবে মহান আল্লাহতায়ালা বরাতের রাতে প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। হজরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মধ্য শাবানের রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে জালওয়া রাখেন, অতঃপর তাঁর সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেন; কিন্তু মুশরিক ও শত্রুতা পোষণকারীকে ক্ষমা করেন না।’ বায়হাকি শরিফ।


হজরত জিবরাইল (আ.) রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছেন, আপনি আপনার উম্মতদের জানিয়ে দেন সারা রাত যেন তারা ইবাদতের মাঝে কাটিয়ে দেয়। পবিত্র শাবান মাসের শবেবরাতের রাতে মহান আল্লাহতায়ালা রহমতের দরজা খুলে দেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি- তিনি বলেন, চারটি রাতে কল্যাণের দরজা খুলে দেওয়া হয়। ১ ঈদুল ফিতরের রাত ২. ঈদুল আজহার রাত ৩. শাবানের ১৫তম রাত ৪. আরাফার রাত।’
শাবান মাসের অর্ধ তারিখের রাতে ইবাদত বন্দেগিতে কাটাতে হবে এবং মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পরদিন রোজা রাখতে হবে এবং রোজা রাখলে সওয়াব পাওয়া যাবে। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল (সা.) বলেছেন, ‘অর্ধ শাবান যখন আসে তখন তোমরা ইবাদত বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখো’। ইবনে মাজাহ।

শবেবরাতে প্রিয় নবী (সা.) কবর জিয়ারত করতেন। তিরমিজি শরিফে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক রাতে আমি রসুল (সা.)কে না পেয়ে খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকিতে পেলাম এবং রসুল (সা.) বললেন, হে আয়েশা তুমি কি জানো আজ ১৫ শাবানের রাত এবং এ রাতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি আহ্বান করতে থাকেন এবং বলতে থাকেন যে, কেউ কি আছো যে আমার থেকে কিছু আশা করো, আমি আজকে তা প্রদান করব এবং এ রাতে আল্লাহতায়ালা বানু কাল্ব গোত্রের বকরির লোমের চেয়ে বেশি পরিমাণ গুনাহগারকে ক্ষমা করে থাকেন। প্রিয় পাঠক, আসুন পবিত্র এ রাতে সব অন্যায়ের জন্য তওবা করি। অন্যের হক পরিশোধ করি। হালাল রিজিক ও নেক হায়াতের জন্য প্রার্থনা করি। হতে পারে আজ জীবনের শেষ রাত। গত বছর এ রাতে কত পরিচিত মানুষ ছিল। আজ তারা কবরে, এ চিন্তা করে জীবনকে পরিবর্তন করে তাকওয়াবান মুত্তাকি হওয়ার চেষ্টা করি। হে আল্লাহ আপনার প্রিয় নবীর উসিলায় আমাদের কবুল করুন। আমিন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.