July 17, 2025, 4:34 pm


ডা. মো. বখতিয়ার

Published:
2025-07-17 10:07:27 BdST

পায়ের পাতা বা গোড়ালি ফুলে গেলে করনীয়


সারাদিন বিভিন্ন কাজের জন্য ছোটাছুটির কারনে শরীরে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে পায়ের উপর। এছাড়া অফিসে একনাগাড়ে বসে কাজ করতে হয়। যার ফলে অনেকেরই পায়ের পাতা ফুলে গিয়ে যন্ত্রণা শুরু হয়।

এই সমস্যার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে ভেনাস ইনকম্পিটেন্স-এর (ঠবহঁং ওহপড়সঢ়বঃবহপব) মতো জটিলতা। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয় এডিমা। এটির অনেকগুলো কারণ এবং লক্ষণ রয়েছে।

আজ আমরা আপনাকে এডিমা সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেবো। যাতে আপনি এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারেন এবং যদি আপনি এই সমস্যায় ভুগতে থাকেন তবে আপনি এডিমা সমস্যাটি ঠিক করতে পারেন।

এডিমা কি?

এডিমা শরীরের কিছু অংশে প্রদাহজনিত সমস্যার নাম। এটি সাধারণত পা, হাঁটু এবং গোড়ালিগুলোতে হয়। এই সমস্যাটি বেশির ভাগ গর্ভবতী মহিলাদের এবং বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি এটি থেকে নিরাপদ। এটি যে কারোর সঙ্গে হতে পারে।

কীভাবে শনাক্ত করা যায়

যদি কোনো ধরনের আঘাত থেকে ফুলে গেলে তবে একে এডিমা বলা যাবে না। এটি সাধারণত পা, গোড়ালি এবং মুখের পাশাপাশি কব্জিতে এডিমা সমস্যা হতে পারে।

এডিমা হওয়ার কারণ

টিস্যু তরল হতে শুরু করলে যেকোনো ব্যক্তির শরীরে এই সমস্যা দেখা দেয়। এটি সাধারণত হয় যখন আপনি বসে থাকেন বা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এসিতে কাজ করার ফলে শরীরে ভিটামিন উ৩ অভাব হয়, যার ফলে মাসলগুলোও দুর্বল হয় যায়।

এছাড়া আপনি যদি খুব বেশি লবণ গ্রহণ করেন অথবা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। হার্ট ফেইলিওর, লিভার ডিজিজ এবং কিডনি রোগ থাকলে এই সমস্যা হতে পারে।

অনেকক্ষণ বসে থেকে যারা কাজ করেন, দীর্ঘ সময় নড়াচড়া না করায় তাদের পায়ের পাতা অনেক সময় ফুলে যায়। শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো না হওয়াতে এই ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে শরীরে পানি জমে গেলে পায়ের পাতা ফুলতে পারে। হার্টে সমস্যা থাকলেও কিন্তু পায়ের পাতা ফুলতে পারে। হার্টের সঙ্গে পায়ের পাতার সংযোগ রয়েছে। তাই হার্ট যথেষ্ট রক্ত পাম্প না করলে পায়ের পাতা ফুলতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে আপনার খাদ্যতালিকায় বিশেষ পরিবর্তন আনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় তৈলাক্ত জিনিস খাবেন না। পায়ের পাতা ফুললে অবশ্যই লবন খাওয়া কমিয়ে ফেলতে হবে। এছাড়াও, ওজন কমাতে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।

এডিমার চিকিৎসা

এডিমাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার একমাত্র উপায় হলো ওষুধ। সাধারণত চিকিৎসকরা এই সমস্যা হ্রাস করতে ডিউরেটিক নামে একটি ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। এই ওষুধটি প্রস্রাব থেকে তরল এবং লবণ বের করে দিয়ে কাজ করে। এই ড্রাগটি ওয়াটার পিলস নামেও পরিচিত।

তবে, গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ঔষধ সেবন করাই শ্রেয়। কারণ সময়মতো যদি এডিমা বন্ধ না হয় তবে এটি আরও ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে ত্বক প্রসারিত হতে শুরু করে। এই কারণে শরীরে অন্যান্য রোগও দেখা দেয়।

ডা. মো. বখতিয়ার; জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.