শাহীন আবদুল বারী
Published:2025-11-07 07:02:43 BdST
টাঙ্গাইল-৫ আসনে টুকুই মনোনয়ন প্রত্যাশা করে
সারা বাংলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় যার পরিচিতি, যাকে যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কৃষক-দিনমজুর, রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ চিনেন তিনি হলেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি বিএনপি তথা সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের গর্ব এবং দুঃসময়ের বন্ধু। টুকু শুধু জাতীয় নেতা নন, তিনি বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারী। বিএনপির রাজপথের লড়াকু যোদ্ধা। টুকু এমপি হলে টাঙ্গাইল হবে উন্নয়নের মডেল শহর। যার আপাদমস্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়া। সেই টুকুর নমিনেশন স্থগিত করে রাখা হয়েছে কোন এক অজানা কারণে।
টাঙ্গাইলের মানুষ বিশ্বাস করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান টাঙ্গাইল-৫ আসনে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে মনোনয়ন দিয়ে জেলার ভঙ্গুর রাজনীতিকে স্বাবলম্বী করবেন। টুকু পরিবারের আত্নত্যাগ জিয়া পরিবার অবশ্যই মূল্যায়ন করবে বলে টাঙ্গাইলের অবহেলিত জনগোষ্ঠী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে।
টুকু দলের কঠিন সময়ে ক্যাম্পাসে, রাজপথে রক্তাক্ত হয়েছেন। জেল খেটেছেন, জুলুমের শিকার হয়েছেন। সেটার স্বীকৃতি কোথায়? টুকুর গাড়িতে চড়ে যারা রাজনীতির ময়দানে যেতেন, সেই সব ছোট ভাই, বন্ধুরা অনেকেই এবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। যোগ্যতার মানদন্ড দিয়ে বিচার করলে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু টাঙ্গাইল-৫ (সদর) থেকে অবশ্যই বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু পতিত সরকার আমলে ৩৫০টি হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। ১২ বার জেলে গিয়ে গড়ে ৫ বছর কারাগারে ছিলেন। একাধিক বার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে টুকুকে মেরে ফেলার। টুকুর পরিবারের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও হাসিনার প্রশাসন যন্ত্র টুকুর উপর নির্যাতনের স্ট্রিমরোলার চালানো বন্ধ করেনি। টুকু পরিবারের উপর সাড়ে ১৫ বছর বর্বর নির্যাতনের বিবরণ শুনলে যে কারও গাঁ শিউরে উঠে। তবুও দলের হাল ছাড়েননি পরিবারের এই সদস্য। শত নির্যাতন সত্বেও আঁকড়ে ধরে রেখেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ। হুকুম তামিম করেছেন বেগম খালেদা জিয়ার। তিলে তিলে নিজেকে নিঃস্ব করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রেখেছেন। বিএনপির বিপ্লবী এই নেতা রাজপথে আন্দোলনে পুলিশের লাঠির আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছেন। টুকু নিজে বক্তব্যে বলতেন, সকালে বাসা থেকে বের হতেন বিভিন্ন জেলা শহরে মামলার হাজিরা দিয়ে রাতে বাসায় ফিরতেন। আওয়ামী দুঃশাসনামলে এটাই ছিল টুকুর প্রতিদিনের রুটিন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত হবে কেন? তারেক রহমান টুকুর মনোনয়ন ঘোষণা দিয়ে তাঁর সর্মথকদের উজ্জিবীত করবেন এটাই টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর দাবি।
গত ৪ নভেম্বর (সোমবার) বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৬৩ আসন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও রাজনীতির "ড্রাইভিং সিটে" ফিরে এসেছে বিএনপি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর থেকে বিএনপি ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে। বিএনপি যদি অভ্যন্তরীণ ঐক্য ধরে রাখতে পারে, তবেই বিএনপির বিজয় নিশ্চিত। আর কঠিন দুঃসময়ের পরীক্ষায় যারা পরীক্ষিত, তাদেরকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে।
রাজনীতির ময়দানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মাঠের যেসব নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত ঝড়িয়েছেন, জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাঁর জনপ্রিয়তা এবং দলের জন্য যে আত্মত্যাগ তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেও অবগত রয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া টুকুকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ-মায়া করেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর দলের জন্য যে, অবদান তা শুধু দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের কাছেও টুকুর গ্রহণযোগ্যতা অপরিসীম।
টাঙ্গাইল-৫ আসনের সর্বস্তরের জনগণ গত ৪ নভেম্বর বিকেলে একমাত্র টুকুর মনোনয়ন ঘোষণা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে টিভির সামনে বসেছিলেন। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, গত বছর ৫ আগস্টের পর টাঙ্গাইলের ভঙ্গুর রাজনীতির হাল ধরেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি দলের জন্য, ধানের শীষ প্রতীকের সাথে যারা আছেন তাদেরকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এটি সম্ভব হয়েছে টুকুর মেধা, পরিশ্রম ও সাংগঠনিক যোগ্যতার ভিত্তিতে।
আওয়ামী দুঃশাসনে নিষ্পেষিত, নির্যাতিত ও জেল-জুলুমের শিকার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু
আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে ৩৫০ টি মিথ্যা মামলা ও ১২ বার জেল খেটেছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের জাতাকলে টুকুর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ৫টি বছর। টুকুর সহধর্মিনী সায়মা পারভীন সিম্মি প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সন্তান ও স্বজনদের নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। তাঁর আর্ত চিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও সাম্মির আর্তনাদে সাড়া দেয়নি হাসিনার প্রশাসন যন্ত্র। টুকুকে জেলের বাইরে ও ভেতরে কয়েকবার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। টুকুর বড়ভাই সাবেক এমপি এডভোকেট আবদুস সালাম পিন্টু বিনা দোষে কারাগারে ছিলেন প্রায় ১৭ বছর। পরিবারের অন্য সব ভাইদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল জঙ্গির সাথে সম্পৃক্ত সাজানো মামলা। এই পরিবারটিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে নানা বানোয়াট অভিযোগ, মিথ্যাচার ও নির্যাতন করেছে পতিত সরকার। টুকু পরিবারের উপর স্পর্শকাতর নির্যাতন চালানো হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধরে রাখতে টুকু পরিবারের মায়া ত্যাগ করে জীবনের প্রায় সবটুকু সময় ব্যয় করে যাচ্ছেন দলের জন্য।
হাসিনা সরকারের অন্যায়,অবিচার প্রতিহত করতে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে অসংখ্যবার রাজপথে রক্তাক্ত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। রাজপথে আন্দোলনের সময় গাড়ির গ্লাস ভেঙে রক্তাক্ত অবস্থায় টেনে হিচড়ে বের করে টুকুকে মিন্টু রোড়ে নিয়ে চোখ বেধে নির্মমভাবে পিটিয়েছে হাসিনার পুলিশ বাহিনী। মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি শিরোনাম হয়েছেন বিএনপির নির্যাতিত নেতা টুকু।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া টুকুর সাহস, শক্তি, মেধা, ধৈর্য ও সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করতেন প্রায় সময়। টুকুকে মূল্যায়ন করে ২০২৪ সালে বিএনপির প্রচার সম্পাদক এর দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। টুকু নিজের রাজনৈতিক এবং নৈতিক আচরণের কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত বিশ্বস্ত হয়ে উঠেন। বিএনপির কঠিন সময়ে মাঠের নেতাদের মধ্যে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু অন্যতম।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু
টুকুর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। টাঙ্গাইল-৫ আসনে জনপ্রিয়তায় সবার থেকে টুকুই এগিয়ে। টাঙ্গাইলে ভঙ্গুর রাজনীতিতে টুকুর সার্বিক চেষ্টায় সর্বস্তরের জনগণ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে এক সুন্দরময় অবস্থা ফিরে এসেছে। কতিপয় স্থানীয় শীর্ষ নেতা টুকুর রাজনৈতিক গঠনমূলক কর্মকান্ড দেখে হতাশায় ভুগছেন। ওই সকল নেতারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে দলের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত রয়েছে। তাদের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র গণমাধ্যমসহ দলের হাইকমান্ড অবগত আছেন।
বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু মেধা, কৌশল ও ধৈর্যের সাথে সবকিছু মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। দল ও নেতাকর্মীদের স্বার্থে একের পর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করছেন। অপরদিকে মিথ্যা প্রচারনা আর অপবাদের যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। দলের নেতাকর্মীসহ জনবিচ্ছিন্নতায় ক্রমেই ছিটকে পড়ছেন তারা।
টাঙ্গাইল-৫ আসনের জনমানুষের কাছে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর গ্রহনযোগ্যতার অন্যতম কারণ হচ্ছে, তিনি এমপি না হয়েই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে সদর উপজেলার বিশাল চরাঞ্চলের উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে টুকুর আন্তরিক চেষ্টা ও তদবিরের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শুরু হবার পথে। তাঁর বিনয়ী আচরণ টাঙ্গাইল সদরের মানুষের কাছে প্রশংসার পাশাপাশি গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে।
টাঙ্গাইলে গত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী দুঃশাসন ও নির্যাতন
সারাদেশে দলমত নির্বিশেষে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নির্যাতনের যে তান্ডব চলেছে, টাঙ্গাইলেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিএনপি-জামায়াতসহ ভিন্নমতের মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, হত্যা, গুম এবং তাদের জমিজমা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ছিল অনেকটা নিত্যদিনের ঘটনা। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন আর অত্যাচারের ভয়াবহ চিত্র বলে শেষ করা যাবেনা। জেলা শহর থেকে তৃনমুল পর্যায়ে একই কায়দায় চলেছে নির্যাতন।
সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলে ২৮১টি মামলায় অন্তত নয় হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়। টাঙ্গাইল থেকে বিএনপি নিধন করতে নেয়া হয় বিশেষ পরিকল্পনা। এর অংশ হিসেবে হাফডজন নেতাকর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। কতজন নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরন করেছেন তার হিসাব নেই। বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করা হয়। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে অনেকে দেশত্যাগ করেন। টাঙ্গাইলে গণহারে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পান আওয়ামী নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীরা। ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পুলিশের গুলিতে জুলাই অভ্যুথানে টাঙ্গাইলের নয়জন ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টাঙ্গাইলে আহত হয়েছে দুইশ’ ৭০ জন। যাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সবকিছুকে সামলে নিয়ে বিএনপিকে একটি শক্তিশালী জায়গায় দাড় করিয়েছেন। বিএনপির যে সব শীর্ষ নেতা আওয়ামী দোসরদের শেল্টার দিচ্ছে তাদের মুখোমুখি শত্রুতে পরিনত হয়েছেন টুকু। টাঙ্গাইলে বিএনপির রাজনীতিতে টুকুর বিকল্প নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের ত্যাগি নেতাকর্মীরা।
টুকু পরিবারের উপর জুলুম- নির্যাতন
টাঙ্গাইলের একজন সৎ, সজ্জন ও সাদাসিধে নেতা টুকুর বড়ভাই, জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। তাকে ফাঁসানো হয় ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়। টাঙ্গাইল থেকে বিএনপি নিধন পরিকল্পনার অংশ ছিলো হাসিনা সরকারের। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যা মামলায় আব্দুস সালাম পিন্টুর দুই ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও রাতুল বাবুকেও আসামী করা হয়। হাসিনার আদালতে সালাম পিন্টু ও মাওলানা তাজউদ্দিনের ফাঁসির আদেশ আর রাতুল বাবুর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়। আব্দুস সালাম পিন্টু এই মামলায় ১৭ বছর কারাবরণ করেন। তার দুই ভাই ছিলেন গত ১৭ বছর পলাতক। সালাম পিন্টুর আরেক ভাই ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কৃষিবিদ শামছুল আলম তোফা একাধিক মামলার আসামী হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বর্তমানে তিনি কানাডায় বসবাস করছেন। আব্দুস সালাম পিন্টুর আরেক ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে ৩৫০ মামলায় আসামী হন টুকু। তিনি ১২ বার গ্রেফতার হয়ে গড়ে ৫ বছর কারাভোগ করেন। রিমান্ডের নামে টুকুর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমাদের পরিবারকে টার্গেট করেছিল। বিএনপিকে ধ্বংসের জন্য এই লক্ষ্য ছিল। তবে আমরা তাতে দমিনি। নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে জাতীয়তাবাদী ঝান্ডা বহন করেছি। এখন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কাজ করছি। যদি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে মনোনয়ন দিয়ে এমপি হওয়ার সুযোগ দেন, আর আল্লাহর রহমত থাকে তাহলে টাঙ্গাইলকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
টুকুর জনপ্রিয়তা ও সদরে উন্নয়নের ছোঁয়া
টাঙ্গাইল- ৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু নিজেকে সাধারন মানুষের কাছে তুলে ধরতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ফলে ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে টুকু একটি জনপ্রিয় নাম। টুকুর ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও তদবিরে বিশেষ করে বিশাল চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।
মাহমুদ নগর ইউনিয়নের বহুলী ও মাকোরকোল মধ্য দিয়ে ধলেশ্বরী নদীর উপর প্রায় এক কিলোমিটার একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য এলজিইডি থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে টুকুর চেষ্টার কারণে। বর্ষাকালে নদীটি পানিতে পরিপূর্ন থাকে এবং শুষ্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে ১/২ ফিট পানি থাকে। প্রায় অধিকাংশ অংশে বালি জমে থাকে। অনেক মানুষ প্রতিদিন ইঞ্জিনচালিত খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে টাঙ্গাইল সদরে আসা যাওয়া করে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে ঘোড়ার গাড়ি, অটোরিকশা ও পায়ে হেঁটে এই এলাকার আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ নদী পারাপার হয়। মেজর জেনারেল হাসান মাহমুদ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে টাঙ্গাইল সদর হতে ধলেশ্বরী নদীর পর্ব পাড় পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মান করেছিলেন। কিন্তু ব্রীজটি নির্মান করতে পারেননি। তাই টাঙ্গাইল পশ্চিম পাড় সহ চৌহালী উপজেলার মানুষের প্রানের দাবি ধলেশ্বরী নদীতে একটি আরসিসি ব্রীজ নির্মান হোক। প্রায় ৭০০ মিটার এই ব্রীজের একটি ছাড়পত্র ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ থেকে এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অক্লান্ত চেষ্টা।
চরাঞ্চলের মানুষ জানান, মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের পর বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর ভরসা রাখছে টাঙ্গাইলবাসী।তিনি ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের মানুষের পাশে বিভিন্নভাবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সুপারিশে ৮টি রাস্তার কাজ পাশ হয়েছে, যা নির্বাচনের আগেই সম্পন্ন হবে বলে আমরা চর এলাকার মানুষ জানতে পেরেছি। এছাড়া মসজিদ ও মাদ্রাসা সহ বহু সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা চর এলাকার মানুষ সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই। তিনি এমপি হলে মন্ত্রীও হবেন বলে টাঙ্গাইলবাসী আশা ব্যক্ত করেছেন।
তিন বছর কেটে গেলেও জেলা বিএনপির কমিটি দিতে ব্যর্থ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি এখনো। জেলা কার্যালয় নেই ১৮ বছর ধরে। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক চালাচ্ছেন দলের কর্মসূচি। ফলে দুই নেতায় চলছে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কার্যক্রম। জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। এই অবস্থায় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা আর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।
তৃনমুল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত প্রায় ১৮ বছর ধরেই জেলা বিএনপি চলছে কার্যালয়বিহীন। ৫ আগষ্টের পরে নেতাকর্মীরা আশা করেছিল জেলার সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক জেলা বিএনপির কার্যালয় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু তা আর বাস্তব হয়নি। উপরন্ত শীর্ষ এই দুই নেতা কমিটি দেয়ার নামে পদ বাণিজ্য করেছেন লাখ লাখ টাকা। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী দোসরদের শেল্টার দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের পহেলা নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে হাসানুজ্জামিল শাহীন সভাপতি এবং এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। একতরফা বানানো কাউন্সিলরদের দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা তার পছন্দমত দুই নেতাকে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বানান। ফলে বিএনপি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে। প্রশ্ন উঠেছে, যারা তিন বছরেও বিএনপির জেলা কমিটি দিতে পারেনি তারা এমপি পদে মনোনয়ন পেতে মরিয়া। বিষয়টি লজ্জাজনক ও হাস্যকর।
অভিযোগ রয়েছে, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দলে ভিড়িয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যার প্রমাণ হচ্ছে, ১২ নং মাহমুদ নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ বর্তমান আওয়ামী চেয়ারম্যান আসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছিলেন। কিন্তু টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মোটা টাকার বিনিময়ে মামলাটি উঠিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। আওয়ামী চেয়ারম্যান আসলামকে নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করেন বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা। বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. ফরহাদ ইকবালের বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য এবং আওয়ামী দোসরদের শেল্টার দিয়ে অবৈধ টাকা উপার্জনের অভিযোগ তদন্ত করে বিএনপি দলীয়ভাবে শহীন-ফরহাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।
টাঙ্গাইল-৫ আসনে দলীয় সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে যারা নির্বাচন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী দোসরদের শেল্টার দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তারা মামলা বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ গ্রহণ করেছে। টুকু তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। যে কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
বিএনপির হাইকমান্ড এই বিষয়গুলো সঠিক তদন্ত করে সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের দাবি। পাশাপাশি টুকুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, দলের জন্য তার আত্মত্যাগ এবং সাংগঠনিক দক্ষতাকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যথাযথ মূল্যায়ন করে টাঙ্গাইল-৫ আসনে দলের মনোনয়ন দিবেন বলে আশা করেন সর্বস্তরের জনগণ।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.
