September 21, 2024, 2:20 am


নেহাল আহমেদ, রাজবাড়ী

Published:
2024-05-21 14:05:59 BdST

ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাঁধা দেয়ার অভিযোগরাজবাড়ীতে নির্বাচনী অফিসের ভিতর ঢুকে হামলা, দুইজন আহত


রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ওপর হামলা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া আনারস প্রতীকের দুইজন সমর্থককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করাসহ ভোট কেন্দ্রে আসতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহতরা হলেন নবাবপুর ইউনিয়নের চরদক্ষিণবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা হাসান খান (২৭) ও সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক ভুট্টো (৪৫)।

বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন আবুল কালাম আজাদ (আনারস প্রতীক) ও এহসানুল হাকিম ওরফে সাধন (মোটরসাইকেল প্রতীক)।

আবুল কালাম আজাদ বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এহসানুল হাকিম সাধন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এহসানুল হাকিমের আপন চাচাতো ভাই মো. জিল্লুল হাকিম রেলমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) সংসদ সদস্য। মো. জিল্লুল হাকিম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

সকাল ১০টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ সোনাপুর মীর মশাররফ হোসেন কলেজ পরিদর্শন করেন। এরপর সোনাপুর বাজারে তাঁর নির্বাচনী ক্যাম্পে আসেন। নির্বাচনী ক্যাম্পে আসার কিছু সময় পওে মোটরসাইকেল প্রতীকের ১৫-২০ জনের একটি দল হামলা চালায়। প্রথমে ক্যাম্পের স্যার্টারের ওপর লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। এরপর চেয়ারম্যানকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে আবদুর রাজ্জাক আহত হন। ক্যাম্পের চেয়ার ভাংচুর করা হয়। তাদের উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আবদুর রাজ্জাক চিকিৎসাধীন আছেন।

অপরদিকে নবাবপুর ইউনিয়নের বড়ইচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে আনারস প্রতীকের সমর্থক হাসান খানকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সোনাপুরের একাধিক নারী অভিযোগ করেন, ভোট কেন্দ্রে আসার সময় পথে মোটর সাইকেল প্রতীকের কর্মীরা তাদের আসতে নিষেধ করেছেন। বলেছেন, ভোট শেষ হয়ে গেছে। এখন আর কারও যাওয়ার দরকার নেই।

স্থানীয় নেতাকর্মীরাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিরা তাদের পচ্ছন্দের প্রার্থীর নির্বাচনে প্রচারে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোনাপুর বাজার এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। বাজারের বিভিন্ন স্থানে জটলা। প্রশাসনের উদ্যোগে জটল ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। কর্মীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সজল কুমার সোম বলেন, তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। আহতদের মধ্যে আবদুর রাজ্জাককে ভর্তি করা হয়েছে। হাসান খানকে রাজবাড়ীতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচনের আগে থেকেই প্রতিপক্ষের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর কর্মীদের ওপর কয়েকবার হামলা করেছে। আজকে তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে। নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। আজ সবশেষ আমার ক্যাম্পের ভেতর প্রবেশ করে আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমার কর্মীদের জখম করা হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী এহসানুল হাকিম। তিনি বলেন, ওই কেন্দ্রে আমার কোন ভোট নেই। আমি বড়জোড় ৫০ থেকে ৬০টি ভোট পেতে পারি। আমি ওই কেন্দ্র ছেড়ে দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সঠিক নয়। ওখানে প্রশাসনের লোকজন ধাওয়া দিয়েছে।

র‌্যাব-১০ ক্যাম্পের এএসপি আবদুল হান্নান খান বলেন, এখানে হামলার খবর শুনে এসেছি। চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট দুইজনের ওপর আঘাত করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা