September 21, 2024, 12:35 am


অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:-

Published:
2024-05-29 16:17:15 BdST

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরবিভ্রান্তমুলক তথ্য দিয়ে ২০০৮ সাল থেকে প্রধান কার্যালয়ে খুঁটি গেড়ে বসে আছে কর্মকর্তারা


  • সিন্ডিকেট, নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতি, টেন্ডার, কেনাকাটা নিয়ন্ত্রন করে কিছু ক্ষমতাধর কর্মকর্তা।

  •  মন্ত্রনালয়ের ভিতর রয়েছে এদের অনুসারী।

  •  সিন্ডিকেটের কারনে অধিদপ্তরে আজ জন্মনিয়ন্ত্রন সামগ্রীর সংকট।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কাওরান বাজার প্রধান কার্যালয় ২০০৮ সালে উদ্বোধনের পর থেকেই ক্ষমতাধর কিছু কর্মকর্তাগন ঘুরে ফিরে একই স্থানে কর্মরত আছে। সহকারী পরিচালক,উপ-পরিচালক ও পরিচালক পদমর্যাদার এ কর্মকর্তারা এক টেবিল থেকে ঘুরে ফিরে অন্য টেবিলে এক ইউনিট থেকে অন্য ইউনিট অথবা পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েও প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত থাকছেন। সরকারের মেয়াদ শেষ হয়, মন্ত্রনালয়ে মন্ত্রী ও সচিব এমনকি অধিদপ্তরে মহা পরিচালক পর্যন্ত পরিবর্তন হলেও ক্ষমতাধর এ কর্মকর্তাদের কিছুতেই অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে বদলী করা হচ্ছে না বা যাচ্ছে না। তাহলে স্বাভাবিক ভাবে একটাই প্রশ্ন জাগে মুষ্টিমেয় এ কয়েকজন কর্মকর্তার বাইরে আর কি অধিদপ্তরের বাহিরে যোগ্য কোন কর্মকর্তা নেই? না ঢাকার বাইরে যোগ্যতম কর্মকর্তাদের প্রধান কার্যালয়ে চাকুরী করার অধিকার নেই? এ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে ঢাকার বাইরের কর্মরত কর্মকর্তারা।

দীর্ঘদিন অধিদপ্তরে কর্মরত থাকার কারনে এদের ডালাপালা ও শিকড় অনেক গভীরে। সমস্ত নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতি, টেন্ডার, বানিজ্য, কেনাকাটা সহ সকল কর্মকান্ডেই এদের কালো হাত প্রসারিত। অধিদপ্তর কেন্দ্রিক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রন এদের হাতে অনেকই দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত আছেন। সচিবের নির্দেশনাকে ও অনেক সময় এরা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে উপস্থাপন করে থাকে। জানা গেছে মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানতে চেয়ে স্মারক নং- ৫৯.০০.০০০.১১০.৯৯.০৮৫.২১-২৯২ তারিখ- ২৩ মে ২০২৪ এ উপ-সচিব শারমীন ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক পত্রে মহাপরিচালক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও মহা-পরিচালক জাতীয় জনসংখ্যা গবেষনা ইনষ্টিটিউট (নিপোর্ট) এ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সহ মাঠ পর্যায় পর্যন্ত পদ ভিত্তিক পদায়নের হালনাগাদ সহকারী পরিচালক/উপ-পরিচালক/পরিচালক এর তথ্য চাওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে (১) নাম,পদবী ও কর্মস্থালের নাম, (২) কর্মরত পদে যোগদানের তারিখ (৩) অতিরিক্ত/ভারপ্রাপ্ত/চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত পদের নাম (৪) যোগদানের তারিখ এর তথ্য চাওয়া হয়েছে।

উক্ত চিঠিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে এবং নিপোর্ট এ যে সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী পাঁচ বছরের অধিক আছে তাদের তথ্য প্রেরন ও বদলীর ব্যবস্থার কথা উল্লেখ আছে।

উল্লেখ্য যে হয়তো হতে পারে কোন কর্মকর্তা তার সংশ্লিষ্ট পদে পদায়ন হয়েছে ৫ বছরের নীচে অথবা প্রধান কার্যালয় থেকেই সে একের পর এক পদোন্নতি পাচ্ছে অথবা পদায়ন হচ্ছে সে ক্ষেত্রে উক্ত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট পদে কর্মকালকে উল্লেখ করে থাকে । অথচ একই অফিসে ১৫ বছর ১০ বছর ৮ বছর যাবৎ কর্মরত। বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।

বর্তমান সচিব আজিজুর রহমানের দৃঢ় পদক্ষেপের কারনে অধিদপ্তরে জেঁকে বসে থাকা অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ঢাকার বাইরে বদলী করা হয়েছে। এর ফলে দেশব্যাপী অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে চাকুরী ক্ষেত্রে ভালো স্থানে পদায়নের আশার সঞ্চার হয়েছে।

“দ্য ফিন্যান্স টুডে” পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অনিয়ম, দুর্নীতি,সিন্ডিকেট টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বদলী ও পদোন্নতি নিয়ে অনুসন্ধানমুলক ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের তদন্তে সত্যতা মিলেছে। এ জন্য অনেক রক্ত চক্ষুকে ও উপেক্ষা করতে হয়েছে।দেশব্যাপী ফিন্যান্স টুডে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান আছে। প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স নীতি” বাস্তবায়ন মিলেছে সচিবের দৃঢ় পদক্ষেপে।

বর্তমানে অধিদপ্তরে যে উপকরন ও জন্ম নিয়ন্ত্রন সামগ্রীর ভয়াবহ সংকেটের কথা দীর্ঘদিন যাবৎ গন মাধ্যমে উঠে এসেছে মন্ত্রনালয় দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন এ প্রত্যাশা দেশবাসী ও সেবা গ্রহীতাদের। একই সাথে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে জোরালো আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার ও দাবী জানাচ্ছে ভূক্তভোগীরা।মূলত: এরাই প্রধান কার্যালয়ে বসে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে থাকে।

 

“দ্য ফিন্যান্স টুডে” অনুসন্ধানে ২০০৮ সালে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে যে সমস্ত কর্মকর্তারা এক ডেস্ক থেকে অন্য ডেস্ক ও পদোন্নতি নিয়ে একই অধিদপ্তরে কর্মরত আছে তাদের প্রাথমিক একটি তালিকা প্রকাশ করা হলো। ইতোপূর্বে অধিদপ্তরে ৩০-৩২ বছর যাবৎ কর্মচারীদের উপর প্রতিবেদন প্রকাশের পর অধিকাংশ কর্মচারীকে ঢাকার বাইরে বদলী করা হয়েছে। এখনও ৩০-৩২ জন কর্মচারী কয়েকজন বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে যাদের নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স।

২০০৮ সাল থেকে কর্মরত ও ৫ বছরের অধিক কর্মকর্তাদের তালিকা:-
১.শাহনাজ পারভীন -উপ-পরিচালক (এমআইএস)
২.জাকিয়া আখতার -উপ-পরিচালক (উপকরন ও সরবরাহ)
৩.আসমা হাসান- উপ-পরিচালক ( আই ই এম)
৪. ইফতেয়ার রহমান- উপ-পরিচালক (আই ই এম)
৫. রোকন উদ্দিন- সহকারী পরিচালক (বাজেট)
৬. নাছের উদ্দিন -এডিটর কাম ট্রান্সলেটর
৭. মো: ফখরুল আলম-সহকারী পরিচালক (কমন সার্ভিস)
৮. ইসরাত জাবীন -সহকারী পরিচালক (অডিট)
৯.সায়মা রেজা-সহকারী পরিচালক (পেনশন)
১০.জয়নুল আবেদিন -প্রোগ্রাম ম্যানেজার (অর্থ ইউনিট)
১১.জাহিদুল ইসলাম -ডিপিএম, এমআইএস,ইউনিট
১২. আবুল কালাম -ডিপিএম এমআইএস
১৩. পুষ্পরানী বিশ্বাস -সহকারী পরিচালক এমআইএস
১৪. ফয়জুর রহমান- সহকারী পরিচালক (সার্ভিসেস) এমসিএইচইউনিট
১৫. ডা: মোস্তাফা কামাল- সহকারী পরিচালক এমসিএইচ
১৬.ডা: রফিকুল ইসলাম- প্রোগ্রাম ম্যানেজার সিসিএসডিপি
১৭. ডা: মঞ্জুরুল ইমলাম -গ্রোগ্রাম ম্যানেজার সিসিএসডিপি

এ ছাড়াও আরও অনেক কর্মকর্তা আছে যাদের তালিকা পরবর্তী প্রতিবেদনে প্রকাশিত হবে এদের মধ্যে অনেক কর্মকর্তা আছে যাদের নামে বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। যা ফিন্যান্স টুডে অনুসন্ধানে তা ইতোমধ্যে বেরিয়ে এসেছে।
এ তালিকা প্রকাশ হলে অধিদপ্তরে সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারনার জন্ম নিবে।

এমন অনেক কর্মকর্তা আছে যাহারা কোন সমস্যা দেখা দিলে এক ইউনিট থেকে অন্য ইউনিটে বদলী হয়। এছাড়া ও ২০-৩০ জন কর্মচারী আছে যাহারা কোন ক্রমেই এদের বদলী করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে এম আই এস ইউনিটে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা যাহারা এডি/ডিডি হওয়ার পর আবার একই অধিদপ্তরে রয়েছে। মন্ত্রনালয় তথ্য চাইলে তখন বলা হয় ৫ বছরে পূর্ন হয়নি। অথচ অধিদপ্তরে চাকুরী ১৫ বছর। এরা বিভ্রান্তমুলক তথ্য মন্ত্রনালয় দিয়ে থাকে।

 

 

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা