September 21, 2024, 12:32 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-06-01 10:15:47 BdST

বেনজীরের সহযোগীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক


দুর্নীতি দমন কমিশন আগামী ৬ ও ৯ জুন বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে তলব করেছেন। কিন্তু এই দুই দিন বেনজীরের পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতি দমন কমিশনে আসবে কি না তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। 

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বেনজীর আহমেদ এখন দেশে নেই। তিনি দুবাইতে অবস্থান করছেন। তার পরিবারের কোন সদস্যই দেশে নেই। ১২ এপ্রিল তিনি দেশত্যাগ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে।

এর ফলে দুর্নীতি দমন কমিশনে সশরীরে উপস্থিত না হয়ে বেনজীর আহমেদ হয়তো তার আইনজীবীকে প্রেরণ করবেন। বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র এমনটাই জানাচ্ছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশন মনে করছে, তিনি দেশে থাকুন আর বিদেশে থাকেন তাকে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। শুধু বেনজীর আহমেদ নয়, বেনজীর আহমেদের সঙ্গে যারা বিভিন্নভাবে অংশীদার এবং ব্যবসায়িক পার্টনার তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ আওতায় আনা হবে। 

দুদকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ধাপে ধাপে সবকিছু তদন্ত করা হবে। 

তিনটি কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন বেনজীরের সহযোগীদের জিজ্ঞাসা করবে। প্রথমত, দুর্নীতি দমন কমিশন তার যে ৩৩ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে, তাতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, তিনি তার টাকাগুলো উত্তোলন করেছেন। প্রায় একশ কোটি টাকার মতো বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। আর এই টাকাগুলো কোথায় গেল তার উৎস সন্ধান করার কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ব্যাংকে টাকা উত্তোলনের লেজার এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে দুর্নীতি দমন কমিশন খোঁজার চেষ্টা করছে কোথায় কোথায় তিনি এই টাকা সরিয়েছেন। অন্য কোন ব্যবসায়িক পার্টনারের কাছে তিনি টাকা রেখেছেন কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অবসরের পর বেনজীর বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার পার্টনারশিপ তৈরি হয়েছিল বলেও প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসা ওই ব্যবসায়ী গ্রুপের সঙ্গে বেনজীরের সংখ্যতার কাহিনি সর্বজনবিদিত।

এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে অন্য একটি বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্বের কারণেই বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অপকীর্তি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল বলেও কোন কোন মহল দাবি করছেন। বেনজীর আহমেদের সাথে ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সাবেক পুলিশপ্রধানের কোন বিনিয়োগ আছে কি না সেটিও তদন্তে আসছে। এছাড়া অন্যান্য কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও বেনজীর আহমেদের ঘনিষ্ঠতার খবর সংগ্রহ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। 

বোট ক্লাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বেনজীর আহমেদের সম্পর্ক পাওয়া যায়। এই সম্পর্কের উৎস খোঁজা হচ্ছে। বেনজীর আহমেদ যখন পুলিশ প্রধান ছিলেন তখন একটি ফার্নিচার কোম্পানির সাথে তার সংখ্যতার খবর পুলিশ মহলে আলোচিত ছিল। বিভিন্ন জেলায় পুলিশের সাজসজ্জার কাজটি ওই ফার্নিচার কোম্পানির মাধ্যমে করানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিলেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান। ওই প্রতিষ্ঠানটিকেও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বেনজীর আহমেদ বিভিন্ন জায়গায় বেনামে বিনিয়োগ করেছেন সেটিও উৎস খুঁজে বের করা হচ্ছে। তাছাড়া বেনজীর আহমেদের সঙ্গে শোবিজের বিভিন্ন তারকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদেরকেও তিনি বিপুল উপঢৌকন দিয়েছেন বলেও প্রাথমিক তথ্যে পাওয়া গেছে।

এই বিষয়গুলো নিয়ে দুদক কাজ করছে বলে জানা গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে, তদন্ত চলছে। তদন্তের প্রয়োজনে যখন যাকে দরকার তাকেই দুর্নীতি দমন কমিশন জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা