September 21, 2024, 4:05 am


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2024-06-04 23:22:11 BdST

মায়ের শোকসভায় দুই ছেলের খুনসুটির ছবি দেখে অশ্রুসিক্ত স্বজনরা


দীর্ঘ ১৪ দিনের লড়াই শেষে দুই সন্তান ও স্বামীকে রেখে ওপারে পাড়ি জমালেন অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানা।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে শেষ হলো এই অভিনেত্রীর কর্মময় পথচলা।

অভিনেত্রী সীমানার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয় দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সীমানার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। চ্যানেল আইতে সীমানার মরদেহ নিয়ে এলে সেখানে তৈরি হয় শোকাবহ পরিবেশ।

চ্যানেল আই ভবনে যেখানে অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানার জন্য শোকবই রাখা, সেখান থেকে একটু দূরে ছিল তার দুই সন্তান শ্রেষ্ঠ ও স্বর্গ। তাদের মা যে মারা গেছেন, তা নিয়ে কোনো ধারণা নেই ছোট এই দুই শিশুর। মায়ের মরদেহের গাড়ি যখন চ্যানেল আই ভবনে পৌঁছাল, আট বছর বয়সী শ্রেষ্ঠ ছোট ভাইকে বলল, মা আসছে, চলো স্বর্গ মাকে দেখি। এই দুই শিশু জানে না যে, তাদের মা আর ফিরে আসবে না।

চ্যানেল আই প্রাঙ্গণ ভর্তি মানুষের মাঝেও দিব্যি ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে, খেলাধুলা করছে। তাদের মা যে আর নেই, সেটা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি এ দুই অবুঝ শিশু!

মায়ের ছবির পাশে দাঁড়িয়ে দুষ্টুমিতে মেতে ছিল তারা। বাচ্চা দুটি এখনো বোঝেনি, বোঝার কথাও নয় যে, তাদের মা আর ফিরবে না। সদ্য মা-হারা দুই বাচ্চাকে দেখে অনেকেই হয়ে উঠেছিলেন অশ্রুসজল!

জানাজার জন্য যখন মরদেহ নামানো হয়, শ্রেষ্ঠ বারবার দৌড়ে যেতে চাইছিল মায়ের কাছে। দেখতে চাইছিল মায়ের মুখ। মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই শ্রেষ্ঠর ছোট উত্তর, ‘মায়ের ইচ্ছে ছিল আমাকে ক্যাডেটে পড়াবে। কিন্তু মা তো মারা গেছে, আমার আর ভালো লাগছে না।’

এরই মধ্যে অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানার প্রথম নামাজের জানাজা শেষ হয়েছে চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে। শেরপুরের নলডাঙা এলাকার গ্রামের বাড়িতে দাফন হবে এই অভিনেত্রীর। এখন চলছে সেই প্রস্তুতি। 

সীমানার পরিবার জানিয়েছে, গত ২১ মে রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সীমানা। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে দ্রুত ধানমন্ডির বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানতে পারেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরদিন আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য সীমানাকে ধানমন্ডির আরেকটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।গত কয়েক দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।গত ২৫ মে এই হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। গত বুধবার বিকেল থেকে সীমানার চিকিৎসা চলছিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সীমানার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত অবনতি হয়েছে। শুরুর দিকে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হলেও বুধবার থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সীমানা চলে যান না ফেরার দেশে।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছিলেন সীমানা। এরপর অসংখ্য নাটক ও বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও।

নির্মাতা তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘দারুচিনি দ্বীপ’ তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা।  গত বছর ‘রোশনী’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সীমানা। এটি পরিচালনা করেছেন বিপ্লব হায়দার।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা