September 20, 2024, 4:33 pm


শাফিন আহমেদ

Published:
2024-07-31 16:11:13 BdST

জাতীয় জাদুঘরের প্রর্দশক প্রভাষক আক্কাস দম্পতির অবৈধ সম্পদের পাহাড়


জাতীয় জাদুঘরের প্রর্দশক প্রভাষক আক্কাস সবার চোখ ফাকি দিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক বুনে গেছেন। গোয়েন্দা ডায়রির অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৭ম গ্রেডের এই কর্মচারী ঢাকায় ৪টি আলিশান ফ্ল্যাটের মালিক। সন্তানকে পড়াশোনা করাচ্ছেন দেশের বাইরে অস্ট্রেলিয়ায়। ছেলের সুবিধার জন্য অস্ট্রেলিয়াতে বাড়ি কেনার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন আক্কাস। এজন্য মাঝে মধ্যেই স্ত্রী শামিমা খাতুনকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় সফর করেন তিনি।  

একাধিক  সুত্রে খবর মিলছে ৪ টি ফ্ল্যাটসহ ঢাকায় আক্কাসের ২৫টি ফ্ল্যাট  আছে। আক্কাসের বৈধভাবে আয়ের উৎস একমাত্র চাকরি করেই এতো সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন পর্যন্ত আক্কাসের আয়ের উৎস জানা যায়নি। আক্কাসের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তদন্তের গতি ঢিলেঢালা ভাবে চলছে।  

এদিকে জাতীয় জাদুঘরের বিভিন্ন কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আক্কাসকে শেল্টার দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কতিপয় কর্মকর্তা। তাদের সহযোগিতায় আক্কাস এখন শত কোটি টাকার মালিক। আক্কাস সম্পদের ভারে কাউকে কেয়ার করেননা। আক্কাস পশ্চিম আগারগাঁও শাপলা হাউজিং এর বন্ধন টাওয়ারের ৫ তলায় ১১০০ স্কয়ারের ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। তিনি এসি সম্বলিত রুমে ঘুমালেও গ্রামের বাড়িতে ঝরাজির্ন ভাবে বসবাস করেন বৃদ্ধা মা। টিনের ঘরের নিচে ঠাই হয়েছে আক্কাসের মায়ের। তার মাও জানেননা ঢাকায় ছেলে আলিশান জীবন যাপন করছেন। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, আক্কাসের অন্যতম সহযোগী হচ্ছেন হুমায়ুন মিয়া নামের এক ব্যক্তি। তিনি কোন ব্যবসা বা চাকরি করেননা। হুমায়ুন উত্তর পীরেরবাগ ৩৬০/ এ রজনীগন্ধায় বসবাস করেন। হুমায়ুনের উত্তর পীরের একটি ফ্ল্যাট আছে। ফ্ল্যাট টি ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। সূত্র বলছে, আক্কাসের টাকায় কেনা ফ্ল্যাট হুমায়ূন মিয়া নামমাত্র।

আক্কাসের সম্পদ বিবরণী নিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে শাপলা হাউজিং- পশ্চিম আগারগাঁও, ছায়াবীথি ২১৩ / ৪ সি এর নিরপত্তাকর্মী জানায়, ‘আক্কাস সাহেব ৭ তলার ফ্ল্যাট বিক্রি করবে’। এই ৮ তলা ভবনের ৭ম তলায় পুরো স্পেসজুড়ে ২৫০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট চমকপ্রদ ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ফ্ল্যাট। যার বর্তমান বাজার মূল্য কোটি টাকার বেশি, তিনি এই ফ্ল্যাট টি বিক্রি করে দিবেন। কারণ অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি ক্রয় করতে অনেক টাকার দরকার। এছাড়াও পীরেরবাগ, আমতলা, মিরপুর ১০, মিরপুর ২ সহ, বসুন্ধারা আবাসিক এলাকায় তার একাধিক ফ্ল্যাট আছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।  

যেসব এলাকায় আক্কাসের ফ্ল্যাট আছেঃ

  • (বন্ধন টাওয়ার, ২১৩/৪-বি-২ শাপলা হাউজিং, পশ্চিম আগারগাও),  (হোয়াইট হাউজ, ২১৩/৪ জি-১ শাপলা হাউজিং, পশ্চিম আগারগাও), (ছায়াবিথী ২১৩/৪-সি শাপলা হাউজিং, পশ্চিম আগারগাও), (রজনীগন্ধ্যা, ৩৬০/এ উত্তর পীরেরবাগ) এছাড়াও নামে বেনামে আমতলা পীরেরবাগ ৬০ ফিট, (মিরপুর- ১০), (মিরপুর-২), বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাকি ফ্ল্যাটগুলো আছে। আক্কাস মিয়ার একাধিক ফ্ল্যাটই নয় রয়েছে দামি গাড়ি, দামি মোটরসাইকেলও। একই প্রজেক্টের ছায়াবীথি ভবনের পাশেই বন্ধন টাওয়ার, ১০ তলা ভবনে ৫ তলায় ১১০০ স্কয়ারের ফ্ল্যাটে থাকেন আক্কাস মিয়া।

আক্কাসের স্ত্রী শামিমা খাতুন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে উচ্চমান সহকারী পদে দায়িত্বরত। অধিদপ্তরের এমন কেউ নেই শামিমা চেনেনা। স্ত্রী শামিমার সুবাধেই আক্কাস দাপিয়ে বেড়ান জাতীয় জাদুঘর। শামিমার নামেও রয়েছে বিপুল পরিমাণ ধন সম্পদ। 

আক্কাস-শামিমা দম্পতি ছেলেকে বিদেশে লেখাপড়া, ঢাকায় বিলাল বহুল জীবন যাপন করছেন কি ভাবে, তা এখনো গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর নজরে আসেনি। তবে এতো তাড়াতাড়ি তাদের উত্থান নিয়ে ইতোমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এসব বিষয় নিয়ে আক্কাসের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। আক্কাসের অন্যতম সহযোগী হুমায়ুন মিয়াকেও পাওয়া চেষ্টা করে তার সন্ধান মিলেনি।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা