September 20, 2024, 3:29 pm


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2024-08-03 20:21:15 BdST

অসহযোগ আন্দোলন: কি হতে যাচ্ছে কাল থেকে?


বিএনপি-জামায়াত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকানোর জন্য অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলো। সেই সময় লন্ডনে পলাতক বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলো। সেই অসহযোগ আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জনগণ অসহযোগ আন্দোলনে সাড়া দেয়নি। অসহযোগ আন্দোলন সফল করার লক্ষ্যে বিএনপি লিফলেট বিতরণ ছাড়া কোন কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।

এখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে সেই পরিত্যক্ত অসহযোগ আন্দোলনকে আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের পরিত্যক্ত কর্মসূচি এবার শিক্ষার্থীদের মুখ দিয়ে দেয়া হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক ফেসবুক লাইভে এসে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন রোববার (৩ আগস্ট) থেকে। শুধু তিনি আন্দোলনের ডাকই দেননি এই কর্মসূচিতে কি করা যাবে না যাবে সে সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছেন।

সবচেয়ে লক্ষণীয় ব্যাপার এই যে, সমন্বয়কের এই বিবৃতি আর লন্ডনে পলাতক পলাতক তারেক জিয়ার ডিসেম্বরে প্রদত্ত বিবৃতি হুবহু এক। কিছু শব্দগত পরিবর্তন ছাড়া তারেক জিয়ার বক্তব্যকে হুবহু অনুকরণ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই অসহযোগ আন্দোলন কি তাহলে তারেক জিয়ার ফর্মুলা।

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দীর্ঘদিন থেকেই সরকার পতনের জন্য নানা কূট-কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। এবার তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকার হটানোর নীল নকশা গ্রহণ করেছে। সেই নীল নকশার অংশ হিসেবেই অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে। অসহযোগ আন্দোলনে পাঁচটি মৌলিক বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে।

প্রথমত, অফিস-আদালত সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে। কোন সরকারি-বেসরকারি অফিস চলবে না।

দ্বিতীয়ত, কোন যানবাহন চলাচল করবে না। মানুষজন ঘরে থাকবে এবং সরকারকে অসমর্থন জানাবে।

তৃতীয়ত, সরকারকে কোন ধরনের খাজনা-ট্যাক্স, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি দেবে না। জনগণ প্রয়োজনে মোমবাতি জ্বালিয়ে বাসায় থাকবে।

চতুর্থত আন্তর্জাতিক মহল যাতে সরকারকে কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা না করে সেজন্য তারা আন্তর্জাতিকভাবে লবিং করবে।

পঞ্চমত, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং এমপিদেরকে কাজ করতে দেয়া হবে না। এছাড়াও কেউ গণভবন কিংবা বঙ্গভবনে যেতে পারবে না। এরকম আরও কিছু কর্মসূচি অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, কোটা সংস্কারের মূল দাবি কি ছিল? কোটা সংস্কারের মূল দাবি ছিলো বর্তমানে কোটা নিয়ে যে, বৈষম্য তা দূর করতে হবে। সে দাবির সমাধান হয়ে গেছে। আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই প্রজ্ঞাপন যথেষ্ট নয়, তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে কোটা বিভাজন করতে হবে। সে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হতেই পারে। তার সাথে সরকার বদলের কোন সম্পর্ক নেয়।

দ্বিতীয়ত, মধ্য জুলাইয়ের সহিংসতার পর তাদের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি দেয়া হয়েছে। এই ৮ দফা দাবির কিছু কিছু দাবি ইতোমধ্যেই পূরণ হয়েছে। যেমন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে। আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকাল ছুটির দিনেও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জামিন দেয়া হয়েছে। অন্য যারা শিক্ষার্থী আছে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং এই তালিকা অনুযায়ী তাদের মুক্তির ব্যবস্থার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকার যেহেতু সবগুলো কর্মকাণ্ডই করছে কাজেই এখন অসহযোগ আন্দোলন কেন? সেই প্রশ্নটি সামনে এসেছে। এখান থেকেই প্রমাণিত হয় যে, কোটা সংস্কার আসলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন না। এই আন্দোলনকে টেনে লম্বা করার মিশনটি হলো বিএনপি-জামায়াতের। বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া যে এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা তা অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা