September 20, 2024, 7:01 am


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2024-08-30 20:39:05 BdST

চলছে বনজীবীদের প্রস্তুতিতিন মাস পর খুলছে সুন্দরবনের দুয়ার


দীর্ঘ তিন মাস প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকার পর আগামী রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। অনুমতি নিয়ে এদিন থেকে পর্যটক ও বনজীবীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন। ‌

দীর্ঘ বিরতির পর সুন্দরবনের ভেতরে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে খুলনার সুন্দরবন–সংলগ্ন বনজীবী পরিবারগুলোতে।

দীর্ঘদিন পর আয়-রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় সুন্দরবনকেন্দ্রিক পেশাজীবীদের মধ্য স্বস্তি ফিরে এসেছে। কেউ নতুন করে জাল বুনছেন, কেউ পুরোনো জাল মেরামত করছেন। আবার কোথাও চলছে নৌকা-ট্রলার প্রস্তুতের শেষ মুহূর্তের কাজ।

বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার; যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া যায়।

জুন থেকে আগস্ট—এই তিন মাস প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারণে গত ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য জেলে ও পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। রবিবার থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে।

তবে জেলেদের অভিযোগ, বন বিভাগ যে উদ্দেশ্যে সুন্দরবনে প্রবেশের তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা সফল হয়নি। কারণ, প্রজনন মৌসুমে মাছ, কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ হলেও তা উপেক্ষা করে অসাধু জেলেরা বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে সুন্দরবনে ঢুকে বিষ ছিটিয়ে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছেন। এতে প্রকৃত জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে সম্পদ আহরণের জন্য ১২ হাজার নৌকা ও ট্রলারকে বোর্ড লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) দেওয়া হয়। এসব নৌযানের মাধ্যমে প্রতিবছর এক থেকে দেড় লাখ জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়াল সুন্দরবনের সম্পদ আহরণ করেন। এছাড়া সুন্দরবনের ৭টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে প্রতিবছর আড়াই লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন।

এদিকে, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের (টোয়াস) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম বলেন, তিন মাস বন্ধ থাকার পর রবিবার থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হচ্ছে। টুরিস্টদের জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। বুকিং পেলে রবিবার থেকে টুরিস্টদের নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবো।

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, বনের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা, বন্য প্রাণী এবং নদী-খালের মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে সব ধরনের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। আগামী রবিবার নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হবে। সেদিন থেকে বনজীবী ও টুরিস্টরা নিয়ম মেনে অনুমতি সাপেক্ষে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন। আমরা বনজীবী ও টুরিস্টদের সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি।

সুন্দরবনের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবন জল-স্থলভাগ শুধু জীববৈচিত্র্যেই নয়, মৎস্য সম্পদের আধার। সে কারণে প্রথমে সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৩ মাস সময় নির্ধারণ করে বন মন্ত্রণালয়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা