September 30, 2024, 7:34 pm


আবু তাহের বাপ্পা

Published:
2024-09-30 17:18:56 BdST

সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাকির দুই কোটি টাকার চেক দিয়েও বদলি ঠেকাতে পারেনি


সড়ক ও জনপদের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনের অনিয়ম-র্দুনীতি এবং পাহাড় সমপরিমাণ সম্পদের অভিযোগে একটি অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে র্দুনীতি দমন কমিশন এ। তিনি পতিত সরকারের আমলে গণভবনের দোহাই দিয়ে মাতার বাড়ি প্রকল্প থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দুদকের কাছে লিখিত ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি মাতার বাড়ি প্রকল্পে আরো বেশি সময় থাকার জন্য বদলি ঠেকাতে একটি মাধ্যমে গণভবনের সাবেক এক কর্তা ব্যাক্তিকে দুই কোটি টাকার প্রমিয়ার ব্যাংক এর (মৌচাক শাখা) একটি চেক প্রদান করেন (১০৩ নং, ২৯৫৯১৩৭)। এর আগে ভূয়া যে পে অর্ডার দেয়া হয় তা ছিলো মার্কেন্টাইল ব্যাংক এর মেসার্স ট্রাস্ট অটো কারের নামে তৈরী করা হয়। যার নাম্বার ২২৫৮২৩১। জানাজানি হবার পর পুরো ডিভিশন জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে এই চেকটি হারিয়ে গেছে বলে জাকির হোসেন দাবি করেন। এ ব্যাপরে তিনি একটি জিডি করেছেন বলেও জানিয়েছেন।

সড়ক ও জনপদের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঢাকার অদুরে আশুলিয়ায় জমি কিনেছেন। উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের ৭৯ নং বাড়িটি ২৮ কোটি টাকায় কিনেছেন। ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় ৯০ কোটি টাকা দিয়ে ৮শত বিঘা জমি কিনেছেন। যার দলিল নাম্বার ২১৩২/২০২০ ইং। ১২ কোটি টাকা মূল্যে গুলশান দুইয়ের ৭ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাড়িতে তিন টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। ১৮ কোটি টাকা মূল্যে পূর্বাঞ্চলে ৭.৫ কাঠার দুটি প্লট কিনেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে স্ত্রী, সন্তান ,ভাই বোনের নামে দুইশত পাচাত্তর কোটি টাকার এফডিআর করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। একশত কোটি টাকার শেয়ার ক্রয় করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আরো অভিযোগ হচ্ছে, ৩২ কোটি টাকা দিয়ে তিনি কানাডায় বাড়ি কিনেছেন। কানাডায় একশত ৫০ কোটি টাকার শেয়ার কেনার অভিযোগও আছে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। ৩০ কোটি টাকা মূল্যে দুবাই শহরে ফ্ল্যাট ও একটি স্বর্ণের দোকান আছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। দুবাই থেকে স্বর্ণ কিনে বাংলাদেশে এনে বিভিন্ন জুয়েলারিতে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাবেক যোগাযোগ ও সেতুমন্তী ওবায়দুল কাদের এর সাথে সড়ক ও জনপদের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনের ছিলো সখ্যতা। তার মাধ্যমে তিনি গণভবনে যাতায়াত করতেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এর সাথেও বিভিন্ন সময়ে গণভবন সহ বড়ো বড়ো আপ্যায়নে যেতেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা গণভবনে দিয়ে আসার অভিযোগ টি ক্রমেই ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। পতিত সরকার আমলে তিনি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন। সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেও আছেন বহাল তবিয়তে। উপরন্ত ভোল পাল্টে চেষ্ঠা করছেন নতুন রূপে বিএনপি পন্থী কর্মকর্তাদের দলে যোগ দিতে। তিনি বিভিন্ন মহলে প্রশাসনের একজন উর্ধ্বতন ব্যাক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে মিডিয়া সহ ডিভিশনের বিভিন্ন কর্মচারিদের ভয় দেখানোর চেষ্ঠা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। কতিপয় ঠিকাদারকে তিনি কাজ দিয়ে সহযোগিতা করায় তারা এখন জাকির হোসেনকে বাচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সড়ক ও জনপদের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি কোন চেক দেইনি কাউকেই। আমার দুই কোটি টাকার চেক হারিয়ে গেছে। তবে দুই কোটি টাকার চেক অফিসের নাকি জাকির হোসেনের তার কোন উত্তর মিলেনি। তিনি জিডির কপিও দেখাতে পারেননি। এদিকে দুই কোটি টাকার এই চেক টি নিয়ে নানা রহস্যের দানা বেধেঁছে। চেকটি আসলে তিনি বদলি ঠেকাতে সাবেক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে ছিলেন গণভবনে দেয়ার জন্য। এমন অভিযোগ ঘুরপাক খাচ্ছে পূরো সড়ক ও জনপদ জুড়ে। যাদের মাধ্যমে এই দুই কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে তারা ভূয়া দুই কোটি টাকার একটি পে অর্ডার তৈরী করে। উল্লেখ্য, চেক প্রদানের আগে এই ভূয়া পে অর্ডার দেয়ার কারণেই জাকির হোসেনের বদলির অর্ডার আর হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চ্যলক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি মাতার বাড়ি প্রকল্পে আরো বেশি সময় থাকার জন্য বদলি ঠেকাতে একটি মাধ্যমে গণভবনের সাবেক এক কর্তা ব্যাক্তিকে দুই কোটি টাকার প্রমিয়ার ব্যাংক এর (মৌচাক শাখা) একটি চেক প্রদান করেন (১০৩ নং, ২৯৫৯১৩৭)। এর আগে ভুয়া যে পে অর্ডার দেয়া হয় তা ছিলো মার্কেন্টাইল ব্যাংক এর মেসার্স ট্রাস্ট অটো কারের নামে তৈরী করা হয়। যার নাম্বার ২২৫৮২৩১। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বর্তমানে সওজের তেজগাঁও সড়ক ভবনে সংযুক্ত আছেন। তিনি ফের মোটা অংকের টাকা নিয়ে লোভনীয় অপার দিচ্ছেন সুবিধামতো কোথাও বদলি হতে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা