December 20, 2025, 3:01 am


কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Published:
2025-12-19 22:05:44 BdST

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে অনুমোদনবাংলাদেশে নতুন মা‌র্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন


বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনে নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। ঢাকায় নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। যুক্তরাষ্ট্রের ১৮তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিনি পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন।

হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন সিনেট তার নিয়োগের বিষয়টি চুড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেছে। ব্রেন্টের দ্রুতই ঢাকায় এসে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) পেশাদার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিজের প্রতিক্রিয়ায় ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন পেয়ে আমি অত্যন্ত সম্মানিত। এই সুযোগের জন্য আমি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। ঢাকায় কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনের বিষয়ে আমি অত্যন্ত আগ্রহী।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে কূটনৈতিক মিশনে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সফলভাবে পালনকালে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।

এর আগে গত ২রা সেপ্টেম্বর ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের নাম মনোনয়ন দিয়ে তা অনুমোদনের জন্য মার্কিন সিনেটে পাঠানো হয়েছিলো।

নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে কাউকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মনোনয়ন অনুমোদনের জন্য সিনেটে পাঠানো হয়। সিনেটে শুনানি হয়। শুনানি শেষে সিনেট অনুমোদন দিলে নতুন রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে কাজ করছেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। ওয়াশিংটন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এই কর্মকর্তা এর আগে মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের কমান্ডারের বৈদেশিক নীতি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক কৌশলগত সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া ম্যানিলা, সান সালভাদর, রিয়াদ এবং হো চি মিন সিটির মার্কিন দূতাবাসে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি উত্তর কোরিয়া নীতি ও অস্ত্র হস্তান্তর বিষয়ক দপ্তরেও কাজ করেছেন।

ক্রিস্টেনসেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়ার কলেজ থেকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটি থেকে পরিসংখ্যানে স্নাতকোত্তর এবং রাইস ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি স্প্যানিশ, জার্মান এবং ভিয়েতনামী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেছেন।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের নিকট অতীতে বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।

কূটনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের নেতৃত্বে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। একইসঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য, গণতন্ত্র ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে তাঁর ভূমিকার দিকে নজর থাকবে সংশ্লিষ্ট মহলের।

ঢাকায় সবশেষ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন পিটার হাস। তিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ঢাকায় দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিস থেকে অবসরে যান পিটার হাস।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.