October 21, 2025, 7:40 pm


শাহীন আবদুল বারী

Published:
2025-10-21 15:36:11 BdST

টুকুর হস্তক্ষেপে টাঙ্গাইল-৫ আসনে উন্নয়নের ছোঁয়া


টাঙ্গাইল সদর -৫ আসনের মাহমুদ নগর ইউনিয়নের বহুলী ও মাকোর কোল গ্রামের মধ‍্য দিয়ে ধলেশ্বরী নদীটি প্রবাহিত। বর্ষাকালে নদীটি পানিতে পরিপূর্ন থাকে এবং শুষ্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে ১/২ ফিট পানি থাকে। প্রায় অধিকাংশ অংশে বালি জমে থাকে। বর্ষায় নদীর পশ্চিম পাড়ের মাকোর কোল,বালিয়া পাড়া, বীরবরুহা, সরাতৈইল, কুকুরিয়া, চিতুলিয়া এবং চৌহালী উপজেলার অধিকাংশ মানুষ প্রতিদিন ইঞ্জিন চালিত খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে টাঙ্গাইল সদরে আসা যাওয়া করে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে ঘোড়ার গাড়ি, অটোরিকশা ও পায়ে হেঁটে এই এলাকার আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ নদী পারাপার হয়। বৃদ্ধ, শিশু, মহিলা ও অসুস্থ মানুষকে অমানবিকভাবে কষ্ট করে নদী পার হতে হয়। এছাড়া মেজর মাহমুদুল হাসান উচ্চ বিদ্যালয়টি মাকোর নদীর পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় প্রতিদিন শতশত ছাত্র-ছাত্রী নৌকা বা খেয়াযোগে নদী পারাপার হয়।

মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে টাঙ্গাইল সদর হতে ধলেশ্বরী নদীর পর্ব পাড় পযর্ন্ত পাকা রাস্তা নির্মান করেছিলেন। কিন্তু ব্রীজটি নির্মান করতে পারেননি। তাই টাঙ্গাইল পশ্চিম পাড় সহ চৌহালী উপজেলার মানুষের প্রানের দাবি ধলেশ্বরী নদীতে একটি আরসিসি (RCC) ব্রীজ নির্মান হোক। ব্রীজটির দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৭০০ মিটার। এই ব্রীজের একটি ছাড়পত্র ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ থেকে এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে।

অতি সম্প্রতি চর এলাকার মানুষের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা বলেন, মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের পর আমরা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর ভরসা রেখেছি। শুনেছি, তিনি টাঙ্গাইল সদর থেকে মনোনয়ন পাবেন। তিনি ইতোমধ্যে চর অঞ্চলের মানুষের পাশে বিভিন্নভাবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সুপারিশে ৮টি রাস্তার কাজ পাশ হয়েছে, যা নির্বাচনের আগেই সম্পন্ন হবে বলে আমরা চর এলাকার মানুষ জানতে পেরেছি। এছাড়াও মসজিদ ও মাদ্রাসা সহ বহু সামাজিক কর্মকাণ্ডে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। আমরা চর এলাকার মানুষ সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই। তিনি এমপি হলে মন্ত্রীও হবেন বলে টাঙ্গাইলবাসী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়ে গেছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। সবাই মনোনয়ন নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় এবার রয়েছে নতুন চমক। টাঙ্গাইল-৫ আসনেও নতুন চমক আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরইমধ্যে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভোটারদের আস্থা অর্জনের পাশাপাশি দলের গ্রীন সিগনাল পেতে যাচ্ছেন।

চরাঞ্চলের মানুষের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলের প্রতি দীর্ঘদিনের অবহেলা ও বিমাতাসুলভ আচরণ এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এক সময়ের প্রাণবন্ত এই অঞ্চল আজ অবকাঠামোগত দুরবস্থা, প্রশাসনিক জটিলতা ও উন্নয়ন স্থবিরতার কারণে ভয়াবহ ভোগান্তিতে নিমজ্জিত। বিশেষ করে এই চর এলাকার জনগণ আজ নাগরিক সুবিধা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই মারাত্মক সংকটে।

গত সরকারের সময় থেকে শুরু হওয়া অবহেলা এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকারের অদক্ষতা ও উদাসীনতায় জনরোষ দিন দিন বাড়ছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, রাস্তা-ঘাটের ভয়াবহ অবস্থা এখন সাধারণ মানুষের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের মনোযোগের অভাবে মানুষ নানা সমস্যা ও বঞ্চনায় দিন কাটাচ্ছে। এই অঞ্চলের কিছু সরকারি চাকরি অবদান রাখলেও অধিকাংশই সুফল থেকে বঞ্চিত। জন্ম নিবন্ধন, সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশন ও রাস্তা মেরামত ব্যবস্থার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।

স্বাস্থ্য খাতে ভয়াবহ চিকিৎসক সংকট, ঔষধের অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অবহেলার কারণে সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তরুণ সমাজের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকসহ নানা অপরাধে তরুণ সমাজ জড়িয়ে পড়ছে। এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন—প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এই ধারা রোধ করা সম্ভব নয়।

শিক্ষা খাতে স্থবিরতার কারণে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অতীত সরকার বেকারত্ব ঘোচাতে দলের লোকজনদের প্রাধান্য দিতো। যারা বিএনপি করেন তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। তাই সুলতান সালাউদ্দিন টুকু একজন সজ্জন ব্যক্তি। উনি চরের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবেন বলে চরবাসি বিশ্বাস করে।

টাঙ্গাইল-৫ আসনে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, গত ১৬ বছর ধরে রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমার নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন দেখে সাধারণ মানুষ খুশি। তাঁর সমর্থকরা প্রচারণায় অংশ নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রশাসনও রাজনৈতিক সহিংসতা রোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

টুকু বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে উন্নয়ন কার্যক্রমে সমতা আনতে হবে এবং জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সমর্থকেরা জানান, অন্য সব প্রার্থীর চেয়ে টুকুর জনসমর্থন অনেক বেশি। তিনি ক্লিন ইমেজের এবং সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন একজন রাজনীতিবিদ। তাকে সবাই এমপি হিসেবে দেখতে চান।

তাঁরা জানান, টুকুর সমর্থন এবং প্রচারণা অন্য সব প্রার্থীরা সহ্য করতে না পেরে নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে সাধারণ মানুষের কাছে। দিন যতই যাচ্ছে টুকুর প্রচার ও জনসমর্থন ততই বাড়ছে।ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে টুকুর জনসভা ও প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

টাঙ্গাইল-৫ আসনে জনমানুষের আশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। সততা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক নেতৃত্ব ও মানবসেবার মিশিলে গড়ে উঠা তার জীবনকাহিনি টাঙ্গাইলবাসীর হৃদয়ে গভীরভাবে স্থান করে নিয়েছে।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশীর্বাদপৃষ্ঠ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অতি আস্থাভাজন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ওয়ান ইলেভেন ও স্বৈরাচার এরশাদ আমলেও নির্যাতন, নিপীড়ন এবং জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। ৯০'র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে টুকু ছিলেন রাজপথের লড়াকু সৈনিক। এরশাদের পেটুয়া বাহিনীর গুলিকে উপেক্ষা করে টুকু রাজপথে আন্দোলনে মিছিলে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিতেন। শেখ হাসিনার শাসনামলে দুইশ'র বেশি মামলা দিয়ে ১৩ বার জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

বিগত এক বছরে টুকু টাঙ্গাইলে বিএনপির অগোছালো দলকে দিনরাত পরিশ্রম করে একটি স্বচ্ছ রাজনীতির নিদর্শনের রূপ-রেখা ফিরিয়ে এনেছেন। কতিপয় নেতা ছাড়া তৃণমূল এবং জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পাশে থাকাতে এই কঠিনতম চেষ্টায় সফল হয়েছেন জনমানুষের নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এই কারণে টাঙ্গাইলের ছোট্ট একটি শিশুও টুকুকে আপন করে নিয়েছে। তরুণদের কাছে টুকু কেবল রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি তরুণদের অভিভাবক। তার দৃঢ়তা, মেধা, প্রজ্ঞা ও ধৈর্য দেখে তরুণ ভোটাররা টুকুকেই বেছে নিয়েছে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্ধারণে। আসন্ন নির্বাচনে তরুণদের প্রথম ভোট হবে ধানের শীষ প্রতীকে। টুকুর প্রতি তরুণ ভোটারদের আস্থা ও বিশ্বাস তিনি টাঙ্গাইল সদরের প্রতিটি মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা জেলার প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। টাঙ্গাইল পৌরসভায় প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষের বসবাস। উপজেলায় রয়েছে ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ—করটিয়া, ঘারিন্দা, মগড়া, মাহমুদনগর, কাকুয়া, হুগড়া, ছিলিমপুর, দাইন্যা, বাঘিল, কাতুলী, গালা ও পোড়াবাড়ী। এসব ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে কাকুয়া, বাঘিল, কাতুলী, গালা, দাইন্যা, মগড়া ও মাহমুদনগর ইউনিয়ন পড়েছে চরাঞ্চলে।

যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর ভাঙন, বর্ষায় নৌপথ নির্ভরতা এবং শুকনো মৌসুমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা এখানকার প্রধান সমস্যা। চরবাসীর জীবনজীবিকা মূলত কৃষি ও মৎস্যনির্ভর, তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল ও ঘরবাড়ি হারানো এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

অন্যদিকে শহরাঞ্চলে যানজট, ড্রেনেজ সংকট ও পানি নিষ্কাশনের সমস্যা দিনদিন প্রকট হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে, তবে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে চরাঞ্চল ও শহর দুই প্রান্তের বৈষম্য আরও বাড়বে।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি

টাঙ্গাইল জেলায় বিএনপির কার্যালয় নেই ১৮ বছর ধরে। নেতাকর্মীরা রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান ও ফুটপাতে বসে দলের কাজ করেন। নেই পূর্ণাঙ্গ কমিটিও। এই অবস্থায় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম হতাশা আর ক্ষোভ বিরাজ করছে। কার্যালয়বিহীন ও জেলা কমিটির বর্তমান করুণ অবস্থার হিসেব মিলাতে পারছেনা তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

তাদের দাবি, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু নিজ উদ্যোগে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.