March 11, 2025, 7:22 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2025-03-10 22:09:19 BdST

ডেল্টা লাইফের মামলার শুনানী আদালতের কার্যতালিকার বাইরে রাখার অভিযোগ


ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীতে ২০১২-১৩ সাল থেকে অনিয়ন, দুর্নীতি ও চুরি-চামারির যে মহোৎসব চলছিলো সেটি বন্ধ করতে উক্ত প্রতিষ্ঠানটিতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ডেভলপমেন্ট অথরিটি কিছু সময়ের জন্য ডেল্টা লাইফের তৎকালীন ভুয়া বোর্ড সাসপেন্ড করে প্রশাসক নিয়োগ দেন।

আদালত সেসময় মেসার্স হাওলাদার ইউনুস অ্যান্ড কোম্পানী চাটার্ড একাউন্টস, মেসার্স ফামস অ্যান্ড চাটার্ড একাউন্টস, আজিজ হালিম কবির চৌধুরী চার্টার্ড একাউন্ট ও একনেবিন চাটার্ড একাউন্টস অডিট কোম্পানীগুলোকে অডিট করার অনুমতি দেন।

তাদের অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে চুরি ও আত্মসাৎ হয়েছে। যার নেপথ্যে ছিলেন তৎকালীন ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান ও বোর্ডের ভুয়া উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে তার স্ত্রী সুরাইয়া রহমান, ছেলে জিয়াদ রহমান, মেয়ে আদিবা রহমান, মেয়ে সাইকা রহমান ও মেয়ে আনিকা রহমান।

সরকার নিয়োজিত ডেল্টা লাইফের সাবেক প্রশাসক মোঃ কুদ্দুস খানের প্রতিবেদনেও বিশদভাবে এই দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। ওই দুর্নীতির বিরুদ্ধে একজন শেয়ারহোল্ডার ও পলিসি হোল্ডার গুলশান থানায় মামলা করতে গেলে বলা হয়, গুলশান থানার ওসি নাই। ফলে বনানী থানায় গত ২৮ নভেম্বর মামলা করা হয়। যার নম্বর ৩৩। বনানী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১১৪ ধারা অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করেন। মামলাটি গ্রহণ করার ফলে মঞ্জুরুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের ধারা থাকলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি।

ওই সুযোগে মঞ্জুরুর রহমান হাইকোর্টের ২৫ নং বেঞ্চে জামিনের আবেদন করে গত ১৮ নভেম্বর ৬ সপ্তাহের জামিন পান। বনানী থানার ওসি চেম্বার কোর্টে জামিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য চেম্বার কোর্টের ডিএজি অফিসে ২৮ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে যান। উহাতে ডিএজি সাহেব বলেন যে, উপরোক্ত মামলা বনানী থানায় করার প্রয়োজন নাই। কারণ এফআইআর অনুযায়ী মঞ্জুরুর রহমান ও তার পরিবারবর্গ ৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট ও শুল্ক আত্মসাৎ করেছেন। ফলে এজি (অ্যাটর্নী জেনারেল) অফিস মামলাটি করিবে।

সেই মতে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস তার পেপারবুক অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ২১৬৬ মামলাটি চেম্বার কোর্টে করা হয়। গত ৩১ ডিসেম্বর শুনানীর দিন ধার্য করা হয়। এরপর ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে জানা যায়, অ্যাটর্নি জেনারেল উক্ত মামলাটি শুনানী না করে ‘আউট অব লিস্ট’ করে রেখেছেন। এই বিষয়ে পরে তাকে চিঠি দেওয়া হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত উক্ত মামলায় কোনও শুনানী হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, গত ৯ মার্চ অ্যাটর্নি জেনারেল 'ল' রিপোর্টার্স ফোরামের ইফতার মাহফিলে বিচারালয়ের দুর্নীতি তুলে ধরার আহবান জানান। তার এই বক্তব্য দৈনিক যুগান্তর, নিউএইজ ও অন্যান্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এ্যাটর্নী জেনারেল নিজেই একটি দুর্নীতি ও জালিয়াতির মামলা শুনানীর সুযোগ না দিয়ে আউট অব লিস্ট করে রেখেছেন। বিষয়টি তার নিজেই বক্তব্যরই বিরুদ্ধাচারণ।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.