December 20, 2025, 3:01 am


কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Published:
2025-12-19 23:57:58 BdST

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনঢাকার পরিস্থিতি 'কৌশলগত চ্যালেঞ্জ', হাসিনাকে আশ্রয় মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে


বর্তমানে ঢাকার রাজনৈতিক পরিবেশ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিস্থিতি দিল্লির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটি।

বাংলাদেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও দিল্লির করণীয় ঠিক করতে ভারত সরকার সম্প্রতি সর্বদলীয় একটি সংসদীয় প্যানেল গঠন করে। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন কমিটি বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে সংসদে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে।

এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ বিষয়ে বেজায় হতাশা ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের জন্য "সবচেয়ে বড় স্ট্র্যাটেজিক (কৌশলগত) চ্যালেঞ্জ" তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতি সরাসরি "বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের দিকে হয়ত যাবে না", তবুও তা মোকাবিলার জন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত যদি এই মুহূর্তে তার নীতিগত অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যুদ্ধের কারণে নয়, বরং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে ঢাকায় নিজের কৌশলগত অবস্থান হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। (অর্থাৎ প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে প্রভাব কমে যেতে পারে)।

শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারনে প্রতিবেশী এই রাষ্ট্রের সাথে ভারতের কৌশলগত বিষয়গুলো পুনর্মূল্যায়ন করার সুপারিশও দিয়েছে।

রিপোর্টে একদিকে যেমন ভারতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানকে "মানবিকতার দৃষ্টিভঙ্গি" থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে নজর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

পাশাপাশি "ইসলামিক মৌলবাদী শক্তির পুনরুত্থান" এবং ঢাকায় "চীন ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের" দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

প্রসঙ্গত, 'ফিউচার অফ ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ রিলেশনশিপ' (ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের ভবিষ্যত) শীর্ষক ওই রিপোর্ট এমন সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে, যখন দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে আরো একবার টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।

এই প্রতিবেদন তৈরির জন্য কমিটি সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য ও মতামত বিবেচনা করেছে। ওই বিশেষজ্ঞরা কমিটিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দেশটিতে বহিরাগত শক্তির প্রভাব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি "কমপ্লেক্স অ্যান্ড ইভল্ভিং" অর্থাৎ জটিল এবং বিবর্তিত বলে মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র বিষয়ক ওই সংসদীয় কমিটি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে ওই কমিটিকে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের বিষয়ে ভারত সরকার "উদ্বিগ্ন"। দুই দেশের সম্পর্কে যাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলী প্রভাব ফেলতে না পারে, তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ধারণা করছে যে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এর প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে" সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বাকস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে ভারত সরকার চিন্তিত।

গত বছর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলীকে খতিয়ে দেখে কমিটির তরফে বলা হয়েছে, "২০২৪ সালের অগাস্ট মাসের রাজনৈতিক ঘটনাগুলি সংখ্যালঘু, উপজাতি সম্প্রদায়, মিডিয়া গ্রুপ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদদের ওপর আক্রমণ এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনাগুলির সাথে উল্লেখযোগ্য অস্থিতিশীলতা এবং অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।"

মুদ্রাস্ফীতি এবং ধীরগতির অর্থনীতি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মানুষের যন্ত্রণা বাড়িয়ে তুলেছে।

শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভারতের সবচেয়ে আস্থাভাজন। এই আস্থা কতটা সেটা খোদ শেখ হাসিনার ভাষায় ছিল এমন—‘ভারতকে যা দিয়েছি সারা জীবন মনে রাখবে’।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তার ক্ষমতাচ্যুতি শুধু আওয়ামী লীগকেই বিপদে ফেলেনি, অভাবনীয় সংকটে ফেলেছে ভারতকেও। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

একদিকে জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত হাসিনা ও তার অনুসারীদের আশ্রয় দেওয়া, অন্যদিকে তার পতনের পর গঠিত ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ‘সম্পর্ক বজায়’ রাখার চ্যালেঞ্জ—এই দুইদিক সামলানো কঠিন হয়ে পড়ায় এক পর্যায়ে হাসিনাপন্থি নীতিতেই ঝুঁকে যায় ভারত সরকার।

সংসদে পেশ করা ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, তার বিষয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত "মানবিক দৃষ্টিকোণ" এবং দেশের ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে মাথায় রেখেই নেওয়া।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, "কমিটি নোট করেছে যে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই দেশে অবস্থান এবং ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি দেশটির মূল্যবোধ এবং মানবিক ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে নেওয়া সিদ্ধান্ত। গুরুতর দুর্দশাগ্রস্ত বা অস্তিত্বের জন্য হুমকির মুখোমুখি ব্যক্তিদের আশ্রয় দিয়েছে ভারত।"

শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি কমিটিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার "ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে বিবৃতি দিচ্ছেন যার অ্যাক্সেস তার কাছে রয়েছে" এবং ভারত তাকে কখনোই ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনা করার জন্য কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম বা রাজনৈতিক স্থান প্রদান করে না।"

চীন ও পাকিস্তানের দিকে ইঙ্গিত

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির নেপথ্যে একাধিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে একদিকে যেমন অস্থিরতার মূল কারণ হিসাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আধিপত্য কমে আসার কথা বলা হয়েছে, তেমনই ইসলামিক মৌলবাদী শক্তির উত্থান এবং বাংলাদেশে চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব বৃদ্ধির দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, "এই ঘটনাবলীর নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের আধিপত্যের পতন, তরুণ নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদের উত্থান, ইসলামপন্থীদের পুনরায় প্রবেশ এবং সম্মিলিতভাবে চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব।"

"ভারত যদি এখনই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যুদ্ধের কারণে নয়, বরং অপ্রাসঙ্গিকতার জন্যই ঢাকায় (ভারতের) কৌশলগত অবস্থান হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।"

কমিটি বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত এবং চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অবকাঠামো, বন্দর উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে।

এই প্রসঙ্গে মোংলা সমুদ্রবন্দরের সম্প্রসারণ, লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি এবং পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা আটটি সাবমেরিন ধারণে সক্ষম—যেখানে বাংলাদেশের হাতে বর্তমানে মাত্র দুটি সাবমেরিন রয়েছে।

কমিটি সুপারিশ করেছে, বাংলাদেশে কোনো বিদেশি শক্তির সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের প্রচেষ্টা কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখতে হবে এবং উন্নয়ন, যোগাযোগ ও বন্দর ব্যবহারে ভারতকে ঢাকাকে তুলনামূলক সুবিধা দিতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গে

কমিটির তরফে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ভারত বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে এবং দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "সমর্থন জানানোর সময় ভারত সরকার জোর দিয়ে বলেছে যে আমাদের নীতিগুলি জনমুখী এবং এর লক্ষ্য কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থা নয়।"

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রভাবিত না করতে পারে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই তালিকায় "অবৈধ অভিবাসন, মৌলবাদ ও চরমপন্থা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে চরমপন্থী বক্তব্য"সহ একাধিক ইস্যু উল্লেখ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়ে ভারত এখনও উদ্বিগ্ন এবং বিভিন্ন স্তরে বিষয়টি উত্থাপনও করা হয়েছে।

১৯৭১-এর প্রসঙ্গ

পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে ১৯৭১-এর প্রসঙ্গও এসেছে। কমিটি বলেছে, ‘১৯৭১ সালে চ্যালেঞ্জটি ছিল অস্তিত্বগত—মানবিক সংকট ও একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতি আরও গভীর ও প্রজন্মগত বিচ্ছিন্নতা তৈরি করছে; এটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং ভারতের কাছ থেকে কৌশলগতভাবে সরে যাওয়ার সম্ভাব্যতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, "যদিও (দুই দেশের মধ্যে) সম্পর্ক আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠছে এবং বাংলাদেশে এক নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে, তবুও এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে ১৯৭১ সালের উত্তরাধিকার আমাদের দুই দেশের মধ্যে সদিচ্ছা বৃদ্ধি এবং ঐতিহাসিক ভ্রাতৃত্ববোধকে শক্তিশালী করবে।"

পাশাপাশি এই প্রসঙ্গে চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। রিপোর্টে পররাষ্ট্র সচিবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, "আমাদের সেই স্বার্থান্বেষী মহলকে মোকাবিলা করতে হবে, যারা ১৯৭১-এর চেতনার বিপরীত আখ্যানকে অনুসরণ করতে চায়।"

হাদির মৃত্যুর প্রসঙ্গ

বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে সংসদীয় কমিটি হতাশা প্রকাশ করেছে।

শশী থারুর বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, "বাংলাদেশ থেকে আসা এই খবরে আমি খুবই হতাশ। পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে আমরা (ভারত) সরকারকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে দ্রুত গঠনমূলকভাবে যোগাযোগ স্থাপন এবং দুই দেশের সম্পর্ককে স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়েছি।"

"এটি এমন একটি সম্পর্ক যেখানে আমাদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে, কারণ আমরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছি এবং এত বছর পরেও, আমরা হঠাৎ বাংলাদেশের জনগণকে ত্যাগ করতে পারি না। একই সঙ্গে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এবং ভারতের পক্ষে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে ধরণের অস্থিরতা ছড়ানো হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগজনক বিষয়।"

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গত ১২ই ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হামলাকারী ভারতে পালিয়েছে, এমন কিছু খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মাঝে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন মুখে কোনো কোনো সংগঠনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরেও উত্তেজনা দেখা দেয়। ভারতের তরফেও প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯:৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার শেষে ওসমান হাদি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর খবর প্রকাশের সাথে সাথে গভীর রাতে ঢাকায় দৈনিক প্রথমআলো, ডেইলি স্টার কার্যালয়, আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার বাসভবন, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এছাড়া, বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম নিউ এইজের সম্পাদক নূরুল কবিরকে ফার্মগেটে নাজেহাল করা হয়। চট্রগ্রাম ও রাজশাহীতে ভারতীয় হাই কমিশনের দুইজন সহকারী কমিশনারের বাসভবনে হামলা করা হয়েছে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাসভবনের ভঙ্গুর স্থাপনাতেওল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

২০২৪ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনাকে প্রত্যাবর্তন ও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব স্পষ্ট হয়েছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.